ঢাকা: জনসাধারণকে স্বল্প ব্যয়ে দ্রুত ও উন্নত গণপরিবহন সেবা দেয়ার জন্য মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান ও আইন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। ঢাকা শহরের যানজট নিরসন, দ্রুত ও উন্নত গণপরিবহন-সেবার লক্ষ্যে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য ‘মেট্রোরেল বিল’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। এতে মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনের বিধান সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার দশম জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের শেষ দিনে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিলটি সংসদে তোলেন। এরপর বিলটির ওপর প্রতিবেদন প্রদানের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটিতে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বিলে উল্লেখ করা হয়, মেট্রোরেল পরিচালনায় যথাযথ পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল এবং যাত্রীর বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং মেট্রোরেল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার নিমিত্তে আইনের বিধান অমান্যকারী ব্যক্তি, পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, টিকেট কালোবাজারি, সেবা বিঘ্নকারী, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ইত্যাদি অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাৎক্ষণিক শাস্তি প্রদানের জন্য অপরাধগুলো মোবাইল কোর্টের আওতায় বিচার করা হবে।
এ জন্য মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের সর্বনিম্ন এক বছর থেকে অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সর্বনিম্ন ৫ লাখ থেকে এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া টিকেট বা বৈধ পাস ছাড়া মেট্রোরেলে ভ্রমণ করলে যাত্রীকে ভাড়ার ১০ গুণ বা অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।
বিলে আইনের ধারা সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়, মেট্রোরেল-সংশ্লিষ্ট অপরাধ আইন বা বিধির অধীন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রজোয্য হবে। এ ছাড়া মোবাইল কোর্ট আইনের অন্যান্য ধারায় ভিন্নরুপ যা থাকুক না কেন, এই আইনের ধারা ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৭, ৩৮ ও ৪০-এর অধীন অপরাধগুলো মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫ নং আইন)-এর অফসিলভুক্ত করে বিচার করা যাবে।
বিলে বলা হয়, মেট্রোরেল আইন, ২০১৪ বিলটির সঙ্গে সরকারি অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে বিধায় বিলটি সংসদে উত্থাপনের নিমিত্তে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮২-এর বিধান অনুসারে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিলে মেট্রোরেল আইনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়, মেট্রোরেলের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিধান রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক। তবে শতভাগ সরকারি কোম্পানির লাইসেন্স ফি প্রদান করতে হবে না। সরকারি-বেসরকারি অংশিদারির ভিত্তিতেও মেট্রোরেল ব্যবস্থা স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, মেট্রোরেল সংগ্রহে কারিগরি মান (Technical Standard)নির্ধারণের জন্য বিধান রাখা হয়েছে। মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকার কর্তৃক কমিটি গঠনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কমিটি পরিচালনা ব্যয় ও নাগরিকদের আর্থিক সামর্থ বিবেচনা নিয়ে ভাড়া নির্ধারণ ও পুনঃবিবেচনা করবে।