লো-স্কোরিং একটা ম্যাচ এতটা উত্তেজনা উপহার দিতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস হয় না। মাত্র ৯৭ রানের পুঁজি নিয়ে কুমিল্লার সেরা ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে অসাধারণ ফাইট দিল রংপুর রাইডার্স বোলাররা।
মাশরাফি যেখানে অধিনায়ক, সেখানে ‘বিনা যুদ্ধে দেব নাহি সূঁচাগ্র মেদিনী’ নীতিই প্রযোজ্য। তাই জয়ের জন্য কুমিল্লাকে অপেক্ষা করতে হলো শেষ ওভার পর্যন্ত। হারাতে হলো ৬ উইকেট। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছে মাশরাফি বাহিনী। এই জয়ে পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের শীর্ষস্থান আরও শক্ত করল তামিম ইকবালের দল।মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৯৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। দলীয় ২২ রানে লিটন দাসকে (৩) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মাশরাফি। সোহাগ গাজীর বলে বিগ হিট করেছিলেন কুমিল্লা অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কিন্তু সীমানার ওপর থেকে অপূর্ব দক্ষতায় সেটিকে ক্যাচে পরিণত করেন নাহিদুল।
২২ রান করে ফিরতে হয় ড্যাশিং ওপেনারকে। ইংলিশ তারকা জস বাটলারকে মাত্র ৫ রানে ফেরান নাজমুল ইসলাম।একটা সময় বোলিংয়ে কুমিল্লাকে চেপে ধরে রংপুর রাইডার্স। ইমরুল কায়েসকে (১৪) নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন মাশরাফি। নাজমুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে শোয়েব মালিক (২০) প্যাভিলিয়নে ফিরলে চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। ম্যাচ গড়ায় রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায়। মাশরাফির বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন সাইফ উদ্দিন (৫)। ৭ বলে তখন কুমিল্লার দরকার ৮ রান। হাসান আলী ব্যাটিংয়ে নেমেই বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে সব সংশয় দূর করে দেন। ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭.১ ওভারে ৯৭ রানে অল-আউট হয় রংপুর রাইডার্স। মাশরাফির দল শুরুতে যে ধাক্কা খেয়েছিল সেটি আর সামলে উঠতে পারেনি। দলীয় ৩ রানেই মেহেদী হাসানের বলে বোল্ড হয়ে যান ক্যারিবিয়ান দানব ক্রিস গেইল (০)। এক ওভার পরেই দ্বিতীয় আঘাত হানেন মেহেদী! শুরুতেই বাউন্ডারি হাঁকানো জিয়াউর রহমানও (৬) বোল্ড হয়ে যান এই তরুণের বলে। বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন তিন নম্বরে নামা ম্যাককালাম এবং মোহাম্মদ মিথুন।
কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের বলে হাসান আলীর হাতে ধরা পড়েন ১৪ বলে ১৭ রান করা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন। এই ব্যাটিং ধস আর রুখতে পারেনি রংপুরের ব্যাটসম্যানরা। ৩১ বলে ২৪ রান করা ম্যাককালামকেও মেহেদী বোল্ড করে দেন। মিডল অর্ডারের ভরসা রবি বোপারা মাত্র ২ রান করে রান-আউট হয়ে যান। হাসান আলীর বলে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হন কাপুদেগারা (২)।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন তরুণ মেহেদী হাসান। তার চতুর্থ শিকার হন নাহিদুল ইসলাম (৬০)। রংপুরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করেন সাইফ উদ্দিন। সাইফের বলে বোল্ড হয়ে যান গত দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই তরুণ পেস অল-রাউন্ডারের তৃতীয় শিকার হন সোহাগ গাজী (১২)। উদানাকে (৯) বোল্ড করে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন আল আমি হোসেন।