টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ। তাঁর মতে, বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিটিআরসির কাজের গতি কমে গেছে। এর ফলে টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিবেদকের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় গতকাল বুধবার এসব কথা বলেন শাহজাহান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিটিআরসি স্বাধীন অবস্থায় যেভাবে কাজ করতে পারত, ২০১০ সালের পর কিছু ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের পর কাজের গতিতে স্থবিরতা এসেছে। আগে যে সিদ্ধান্ত ১৫ দিনে নেওয়া যেত, সেটি নিতে এখন দুই, তিন, চার মাস লেগে যাচ্ছে। এমনকি কোনো সিদ্ধান্ত বছর পেরিয়ে গেলেও নেওয়া যাচ্ছে না। স্বাধীন কমিশন হিসেবে বিটিআরসির ক্ষমতা না থাকায় এমনটা হচ্ছে।
শাহজাহান মাহমুদ এ বিষয়ে আরও বলেন, ‘কাজ যদি দ্রুত গতিতে না হয় তাহলে গ্রাহকেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) অনেক লাইসেন্স আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আটকে আছে। এতে এই ব্যবসা সম্প্রসারিত হচ্ছে না, গ্রাহকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আইএসপি ও ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা আমরা বাড়াতে না পারব, ততক্ষণ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারব না।’
বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাত এখনো উপযুক্ত পর্যায়ে যেতে পারেনি বলেও মনে করেন বিটিআরসির প্রধান। শাহজাহান মাহমুদ বলেন, এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে অনেক আগেই ফোরজি (চতুর্থ প্রজন্ম) সেবা চালু হয়ে গেছে, বাংলাদেশে এখনো এটি চালুর অপেক্ষায় আছে। তবে যত দ্রুত সম্ভব এটি চালু করা হবে। টাওয়ার শেয়ারিং, নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর (এমএনপি) পরিবর্তন, ইন্টারনেট অব থিংসের মতো সেবা চালুর বিষয়ে বিটিআরসি কাজ করে যাচ্ছে।
ফোরজি বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, সংশোধিত ফোরজি নীতিমালা ও তরঙ্গ নিলাম নীতিমালায় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। সংশোধিত নীতিমালা হাতে পেলেই ফোরজি লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে বিটিআরসি।
জানা গেছে, ফোরজি নীতিমালার বিষয়ে অপারেটররা যে ২৩টি আপত্তি জানিয়েছিল, তার ২২টিই মেনে নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। তরঙ্গ ব্যবহারে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার দাম মেগাহার্টজপ্রতি ৩২ কোটি টাকা করা হয়েছে। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহেদী ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বক্তব্য দেন।