শিশু সন্তানকে জবাই করে হত্যার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে

Slider ঢাকা

205021Jamalpur_kalerkantho_pic

 

 

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  মেলান্দহ পৌরসভার মলিকাডাঙ্গা গ্রামে সোমবার বিকালে দুই সন্তানের জননী মীম আক্তার (২৩) তার আট মাসের শিশু সন্তান আল মামুনকে জবাই করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘাতক মীম আক্তারের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার আদিপৈত গ্রামের ফকির আলীর কন্যা মীম আক্তারের সঙ্গে আজ থেকে চার বছর আগে ময়মনসিংহ জেলার বিদ্যাগঞ্জ গ্রামের মীর সুরফাত আলীর পুত্র রাশেদুল ইসলামের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকেই মীম আক্তার তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছে সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হয়।একপর্যায়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন দুইটি শিশু সন্তানসহ মীম আক্তারকে স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। ওই সময় নিরুপায় হয়ে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে মীম আক্তার মেলান্দহ উপজেলার আদিপৈত গ্রামে তার বাবার বাড়িতে উঠে। কিন্তু অভাবী পিতা ফকির আলী নিজ কন্যা মীম আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে ভরণপোষণ করতে ব্যর্থ হয়। পরে মীম আক্তার তার সন্তান দুটিকে নিয়ে মেলান্দহ উপজেলার মলিকাডাঙ্গা গ্রামে তার অতি দরিদ্র বিধবা নানী হালিমা বেওয়ার বাড়িতে গিয়ে উঠেন।

এরপর থেকে মীম আক্তার মলিকাডাংগা গ্রামে তার নানীর বাড়িতেই অবস্থান করছে এবং অতি কষ্টে জীবন ধারণ করছিল। এ অবস্থায় সোমবার বিকালে দুই সন্তানের জননী মীম আক্তার তার ছয় মাসের শিশু সন্তান আল মামুনকে নানির বাড়িতেই সকলের অগোচরে বটি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠে। পরে এ ঘটনা এলাকাবাসী মেলান্দহ থানা পুলিশকে জানায়। এলাকাবাসীর ধারণা মীম আক্তার অভাবের তাড়নায় নিজের এবং সন্তানদের খাবার জোগাড় করতে না পেরে নিজ সন্তানকে জবাই করে হত্যা করেছে।

মীম আক্তারের নানি বিধবা হালিমা বেগম আরো জানান, তার নাতি মীম আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার সকালে মেলান্দহ পৌর সভার কাউন্সিলর সাজেদুল হকের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তারা দুটি শিশু সন্তানসহ চার জনের পেটের ভাতের জন্য সাহায্য কামনা করেন এবং মীমের ওপর তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের বর্ণনা করে বিচার প্রার্থনা করেন। সেখানে পৌর কাউন্সিলর বিচারের আশ্বাস দিলে তারা দুইজনই খালি হাতে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।

পরে নানি হালিমা বেওয়া তাদের খাবার জোগাড় করতে বাড়ির বাইরে গেলে মীম আক্তার এর কাছেই তার ছয় মাসের শিশু পুত্র আল-মামুনের গলায় কাটা জখম প্রাপ্ত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিত্সক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনা এলাকাবাসী মেলান্দহ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন এবং অভিযুক্ত মীম আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

অভিযুক্ত মীম আক্তার জানান, সে নিজ বাড়ির উঠানে বটি দিয়ে বেগুন তরকারি কাটার সময় শিশু আল মামুন কোল থেকে বটির ওপর পড়ে গলা কেটে যায়। পরে শিশুটিকে দ্রম্নত হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মেলান্দহ থানার ওসি মাজহারুল করিম জানান, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও অভিযুক্ত মীম আক্তারকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত মীম আক্তার এবং তার বৃদ্ধ নানি ভিক্ষা করে প্রায় ছয় মাস ধরে দুইটি শিশুসহ তাদের জীবনধারণ করছিল। তবে এটি হত্যা না দুর্ঘটনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। এ ব্যাপারে আটক অভিযুক্ত মীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *