চীনের হাইপারসনিক বিমানে যুক্তরাষ্ট্রে হামলা সম্ভব

Slider সারাবিশ্ব

d1b8e28264c363595fc08f7212db51de-5a15686847524

 

 

 

 

হাইপারসনিক বিমান তৈরি করছে অর্থবিত্তে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ চীন। তাদের এই বিমান প্রতি সেকেন্ডে ১২ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম। হাইপারসনিক বিমানটি চীন থেকে মার্কিন উপকূলে পৌঁছাতে সময় নেবে মাত্র ১৪ মিনিট। চালাতে পারবে পারমাণবিক বোমা হামলা।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়, বছর তিনেকের মধ্যে হাইপারসনিক এই বিমান আকাশে উড়বে।

হংকংভিত্তিক এই সংবাদপত্রে স্টিফেন চ্যানের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, খুব অল্প সময়েই যুদ্ধবিমানটি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে পারমাণবিক বোমা ফেলতে পারবে। বিমানের গতিবেগ শব্দের চেয়ে ৩৫ গুণ বেশি। এই বেগে উড়লে চীন থেকে মার্কিন উপকূলে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১৪ মিনিট। অর্থাৎ, ঘণ্টায় চারবার চীনা যুদ্ধবিমানটি মার্কিন উপকূলে পারমাণবিক বোমা নিয়ে পৌঁছাতে পারবে। বিমানটি তৈরির কাজ চলছে। বিশেষ এক উইন্ড টানেলের মধ্যে জেট বিমানটিকে পরীক্ষা করা হবে। বিশেষ এই উইন্ড টানেল তৈরির কাজ চলছে এখন।

এই প্রকল্পে কাজ করছেন চীনের বেইজিংয়ের হাই টেম্পারেচার গ্যাস ডায়নামিক্সের উপপরিচালক জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ঝাও ওয়েই। তিনি বলেন, চীনের হাইপারসনিক বিমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০২০ সালের মধ্যে বা এর কাছাকাছি সময়ে এটি নির্মাণে গবেষকেরা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এ প্রকল্প প্রকৌশলগত হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে গতি সঞ্চার করবে। সামরিক খাতে এগিয়ে যাবে দেশ।

এই হাইপারসনিক বিমানের আকাশে উড়লে বিমানের স্থল পরীক্ষার ব্যর্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী উইন্ড টানেলটি নিউইয়র্কের বাফেলোতে রয়েছে। লেনক্স-এক্স সুবিধার এই টানেল প্রতি সেকেন্ডে ১০ কিলোমিটার গতিতে কাজ করে। শব্দের গতির চেয়ে যা ৩০ গুণ বেশি।

মার্কিন সেনাবাহিনী এইচটিভি-২ নামে মাচ টোয়েন্টি হাইপারসনিক এয়ারক্রাফট ২০১১ সালে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরেই তা আটলান্টিকে বিধ্বস্ত হয়।

এদিকে ভারত, রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াও কিছু হাইপারসনিক বিমানের পরীক্ষা চালিয়েছে। এগুলো পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম।

বেইজিংয়ের বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারোনেটিকস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক উ ডাফাং বলেন, ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এখন হাইপারসনিক বিমানের দৌড় শুরু করবে। এটা আমাদের জন্য খুব ভালো একটি খবর।’ হাইপারসনিক বিমানে ব্যবহৃত একটি নতুন তাপ-ঢাল আবিষ্কারের জন্য ২০১৩ সালে উ ডাফাং একটি জাতীয় প্রযুক্তি পুরস্কার পেয়েছেন।

উইন্ড টানেল প্রকল্পে যে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন, তাঁদেরই একজনকে উদ্ধৃত করেছে চীনা সংবাদপত্রটি। ওই বিজ্ঞানী বলেন, যে হাইপারসনিক জেট তৈরি হচ্ছে, এর পরীক্ষা শুধু নয়, আরও নানা ধরনের হাইপারসনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং সরঞ্জাম তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে চীন। নির্মীয়মাণ উইন্ড টানেলটি সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজেও লাগবে।

এই প্রকল্প অবশ্য চীনের প্রথম হাইপারসনিক জেট প্রকল্প নয়। ডিএফ-জেএফ নামে একটি হাইপারসনিক জেট ২০১৩ সালেই তৈরি করে ফেলেছে চীন। এ পর্যন্ত অন্তত সাতবার তার পরীক্ষামূলক উড্ডয়নও সফল হয়েছে বলে ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে। এই ডিএফ-জেডএফ শব্দের ৫ গুণ এবং ১০ গুণ বেগে উড়তে পারে। ডিএফ-জেডএফ ব্যবহার করেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে চীনের পক্ষে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো বা পারমাণবিক বোমা ফেলা সম্ভব বলে চীনা বিজ্ঞানীদের দাবি। কিন্তু তার চেয়েও অনেক শক্তিশালী, দ্রুতগামী এবং প্রায় অপ্রতিরোধ্য জেট তৈরির পথে চীন অনেকটা এগিয়েছে বলে হংকংভিত্তিক সংবাদপত্রটি জানাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *