৬৫% মানুষ অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে চায় না

অর্থ ও বাণিজ্য

lamudiনিজস্ব প্রতিবেদক : জালিয়াতির শিকার এবং সামর্থ না থাকার কারণে বাংলাদেশের ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ অ্যাপার্টম্যান্ট ক্রয়ে আগ্রহী নয় বলে ‘লামুডি বাংলাদেশের’ একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে। এছাড়া ১২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের অ্যাপার্টম্যান্ট ক্রয়ে কোনো প্রকার আগ্রহই নেই বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে লামুডি বাংলাদেশ এবং সিটিস্কেপ যৌথভাবে আয়োজন করে রিয়েল এস্টেট সামিট ২০১৪। লামুডি পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজেশ গ্রোভার।
রাজেশ গ্রোভার প্রতিবেদনটির আলোকে বলেন, ‘এদেশে ২১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ বাসা (ফ্ল্যাট) ক্রয়ের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করে।’
কেন মানুষ ভাড়া বাসার চেয়ে কেনায় বেশি আগ্রহী এমন এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, প্রপার্টির সহজলভ্যতার কারণে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, মালিকানায় বাসস্থানের নিশ্চয়তার জন্য ৭৩ শতাংশ, পরিবার, বন্ধুদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ বাসা কেনায় আগ্রহী।
রাজেশ বলেন, ‘বাসা ভাড়া ও কেনার জন্য মানুষ তিনটি বিষয়ের দিকে নজর দেয়। এর মধ্যে প্রধান এবং প্রথম বিষয় হলো নিরাপত্তা। তারপর আছে বাড়ির অবস্থান ও জীবনযাপনের মান এবং সাংস্কৃতিক বিষয়াদী। তবে ভাড়া বা কেনা যাই হোক না কেন, ৮০ শতাংশ মানুষই এখন এপার্টমেন্টে বাস করতে চায়।’
যেকারণে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এদেশের আবাসন সমস্যার সমাধান এবং ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য নগরীতে (পরিকল্পিতভাবে নতুন রূপে) গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এর জন্য প্রয়োজন আবাসন খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ।’
গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘৫৫ শতাংশ আবাসন ব্যবসায়ী মনে করে এখনই এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর উপযুক্ত সময়। বিগত কয়েক বছরে ৭৩ শতাংশ জীবনযাপনের মান উন্নয়ন, ৪৫ শতাংশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ৭৩ শতাংশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণেই সম্ভবনাময় এ খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’
২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্লট বিক্রির হার অনেক কমে গিয়েছিল উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠাটাই রিয়েল এস্টেট বাজার সম্প্রসারণের বড় হাতিয়ার। ওই সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণও অনেক কমে গিয়েছে। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অন্যতম স্থায়ী চালিকা শক্তি হিসেবে প্রপার্টি মার্কেটকে বিবেচনা করা উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে মোট জিডিপির প্রায় ১২-১৫ শতাংশ আসে আবাসন খাত থেকে। এ সেক্টর থেকে বাৎসরিক আয় প্রায় ২০ বিলিয়ন টাকা।’
তবে এ সেক্টরের গ্রোথ দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না বলেও উঠে এসেছে এ গবেষণায়।
এ সময় সিটিস্কেপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাহিদ সরোয়ার বলেন, ‘আমাদের আবাসনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ নিয়েও চিন্তা করতে হবে। তা না হলে আবাসন ভালো হলেও আমাদের অস্তিত্বের সঙ্কট তৈরি হবে। কারণ আমরা দৈনন্দিন কাজের ৯০ শতাংশ সময় বাসা বা কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করি। সেটা যদি ভালো না হয় তবে আমরা ভালো থাকবো না। তাই সুস্থতার জন্য আমাদের নতুনভাবে ভাবতে হবে।’
সুপার স্টার গ্রুপের (এসজিএস) সিএমও আবতাব আহমেদ খুরশিদ বলেন, ‘অধিকাংশ মানুষই জানে না আবাসন কেনার জন্য তাদের কোথায় যেতে হবে। আর আবাসন ব্যবসায় সম্পৃক্তরাও গ্রাহকদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে।’
যা পেশাগত দায়িত্বে যথেষ্ট মনোযোগী না হওয়ার লক্ষণ বলে মনে করেন তিনি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইন্সটিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশের সভাপতি আবু সাইদ আহমেদসহ বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *