এম এ কাহার বকুল: লালমনিরহাট প্রতিনিধি;
লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এক পত্রে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে তাকে সংগঠন গতিশীল করার দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এরশাদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রকে ভুয়া উল্লেখ করে মেজর (অব.) খালেদ আখতারকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য এমজি মোস্তফা। এর ফলে এ নিয়ে গোটা জেলায় ধুম্রজাল দেখা দিয়েছে। তবে হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম আসনে এরশাদের ছোট ভাই দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান বলে জানিয়েছেন পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। প্রার্থী নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাল্টা-পাল্টি অবস্থানে মাঠপর্যায়ে তারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বলে দাবি করেছেন। সব মিলে জেলার পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় জাতীয় পার্টিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে গত ১৬ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ওই পত্রে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দুই উপজেলায় জাতীয় পার্টি ও সব অঙ্গ সংগঠনের সর্বস্তরের কমিটিসমূহ গঠন-পুনর্গঠন বা শক্তিশালী করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে সহযোগিতা করতে জেলা জাতীয় পার্টির কমিটিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও হাতীবান্ধা উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এমজি মোস্তফা বলেন, ‘লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে এখনো কোনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেননি দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে প্রার্থী করে এরশাদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রটি ভুয়া। প্রার্থী ঘোষণা দেবে দলের মনোনয়ন বোর্ড। দলের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া পত্র তৈরি করেছে একটি মহল। তারপরও যদি এ আসনে মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে প্রার্থী করা হয় তাহলে দলের নেতাকর্মীরা তাকে প্রতিহত করবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এক পত্রে প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতারকে প্রার্থী ঘোষণা দিলেও মাঠে তাকে দেখা যায়নি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এ আসনে দলের কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদেরকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। লালমনিরহাট জেলায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের কাছে জিএম কাদের ক্লিন ইমেজের নেতা হওয়ায় বেশ জনপ্রিয়। গত ১৮ নভেম্বর হাতীবান্ধায় এক মত বিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপস্থিতিতে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীরা বহিরাগত প্রার্থীকে প্রতিহিত করার ঘোষণা দিয়ে জিএম কাদেরকে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার দাবি জানান।