চোখ ধাঁধানো এক ম্যাচ! অবিশ্বাস্য এক জয়! মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানসের এই জয়কে কোনো বিশেষণে বিশেষায়িত করলে কম হয়ে যাবে! রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে প্রায় হেরে বসা ম্যাচ টেল অ্যান্ডারদের দাপটে ২ উইকেটে জিতে নিল খুলনা টাইটানস। সেটাও আবার ৪ বল হাতে রেখে।
৮ নম্বরে নেমে স্রেফ ভেলকি দেখালেন আরিফুল হক। ১৯ বলে ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেলেন তিনিই।রাজধানীর মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে ১৬৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় খুলনা টাইটানস। দলীয় ৫ রানেই চ্যাডউইক ওয়ালটনকে (৪) বোল্ড করে দেন মোহাম্মদ সামি। ৮ রানের ব্যবধানে সামির দ্বিতীয় শিকার হন লঙ্কান ব্যাটসম্যান সেকুজে প্রসন্ন (৬)। অপর ওপেনার রুশোকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ।
সেই প্রচেষ্টায় ছেদ পড়ে মেহেদী মিরাজের বলে রুশো (২০) ড্যারেন স্যামির তালুবন্দি হলে। ৫ রানের ব্যবধানে আফিফ হোসেনকেও (৫) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ফ্র্যাংকলিন। একপ্রান্ত আগলে একাই লড়াই করতে থাকেন মাহমুদ উল্লাহ।
৩৬ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। একসময় রিয়াদের লড়াইও থামে। হোসেন আলীর বলে বোল্ড হয়ে যান ৪৪ বলে ৫৬ রান করে।মাহমুদ উল্লাহর বিদায়ের পর পথ হারায় খুলনা টাইটানস। ২২ গজে তখন কেবল আসা-যাওয়ার মিছিল। নাজমুল হোসেন শান্ত ৪ রান করে ফিরেন। ১২ বলে ১২ রান করা ব্র্যাথওয়েট ফ্র্যাংকলিনের বলে বোল্ড হয়ে যান। ‘নাইটওয়াচম্যান’ খ্যাত শফিউলকে বোল্ড করে তৃতীয় শিকার ধরেন সামি। কিন্তু নাটকের তখনও আরও বাকী! কারণ ৮ নম্বরে নামা আরিফুল হক তখনও উইকেটে। ১৯ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ২ ওভার বাউন্ডারিতে অপরাজিত ৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে খুলনাকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেলেন তিনি! ৪ বল আর ২ উইকেট হাতে রেখে বিজয়োল্লাসে মাতল খুলনা টাইটানস।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান তোলে রাজশাহী কিংস। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জুনায়েদ খানের জোড়া আঘাতে বিপদে পড়ে গিয়েছিল তারা। দলীয় ৬ রানে জুনায়েদের বলে নাজমু হোসেনের তালুবন্দি হন মুমিনুল হক (৫)। ওই ওভারের পঞ্চম বলে নতুন ব্যাটসম্যন ডুরমন্ডকে (০) বোল্ড করে দেন জুনায়েদ। এরপর মঞ্চে আবির্ভাব আবু জায়েদের। তার বলে ক্যাচ দিয়ে ‘ডাক’ মারেন জাকির হাসান।
দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর ডোয়াইন স্মিথ আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় রাজশাহী্ দুজনেই হাত চালিয়ে খেলতে থাকেন। হাফ সেঞ্চুরি করার পর ৩৬ বলে ৭ চার ৪ ছক্কায় ৬২ রান করে আফিফ হোসেনের বলে শান্তর তালুবন্দি হন ডোয়াইন স্মিথ। ভাঙে ৭৬ রানের জুটি। মুশফিকুর রহিমও ৩৩ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ৩ ওভার বাউন্ডারিতে ৫৫ রান করে আবু জায়েদের শিকার হন।
আরেকবার ব্যাকফুটে চলে যায় রাজশাহী কিংস। তবে ৫ নম্বরে নামা ফ্র্যাংকলিন হাল ধরেন। ২৭ বলে ১ ছক্কায় ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। কিন্তু সঙ্গী জোটেনি। অধিনায়ক স্যামি (৩), মেহেদী মিরাজ (৩), মোহাম্মদ সামি (৩) কেউ বড় স্কোর করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে রাজশাহীর রান দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৬৬। খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন জুনায়েদ খান। আবু জায়েদ নিয়েছেন ২টি।