ফারমার্স ব্যাংকে রাখা আমানত অবশেষে ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। রোববার বেলা তিনটার দিকে ব্যাংকটি চেকের বিপরীতে টাকা দিয়েছে। সোনালী ব্যাংকের শেরাটন শাখায় জমা হয়েছে এ অর্থ। এর আগে গত ১৩-১৫ নভেম্বর ৩ দফায় চেক দিলেও টাকা দেয়নি ফারমার্স ব্যাংক।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের শেরাটন শাখার ব্যবস্থাপক মল্লিক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বিটিসিএলের পক্ষে আমরা ফারমার্স ব্যাংকে চেক জমা দিয়েছিলাম। একাধিকবার চেক ফেরত আসে। তবে আজ রোববার টাকা ফেরত দিয়েছে।’
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পরই সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত নেওয়ার বিশেষ সুযোগ পায় নতুন নয় ব্যাংক। সরকারের দেওয়া বিশেষ এই সুযোগে প্রতিষ্ঠার ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা স্থায়ী আমানত নেয় ফারমার্স ব্যাংক। যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ১২ নভেম্বর। টাকা তুলতে কয়েক দফায় চেক জমা দিয়েও টাকা পায়নি বিটিসিএল। বাধ্য হয়ে তাই এ বিষয়ে গভর্নরকে চিঠি দেয় সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল।
বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে নিকট অতীতে এ রকম ঘটনা ঘটেনি। এক দশক আগে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে এমন ঘটনা ঘটে। দ্য নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী, গ্রাহকের হিসাবে টাকা থাকবে, ব্যাংক যথাসময়ে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য। না দিলে ক্ষতিপূরণ পাবে গ্রাহক।
সোনালী ব্যাংক সূত্র জানায়, বিটিসিএলের মূল ব্যাংক হিসাব সোনালী ব্যাংকের শেরাটন শাখায়। এই হিসাব থেকেই ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় ২৫ কোটি টাকা স্থায়ী আমানত রাখে বিটিসিএল। যার মেয়াদ পূরণ হয় ১২ নভেম্বর। বিটিসিএল ৯ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে সোনালী ব্যাংককে ৩৫ কোটি ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ১০১ টাকার একটি পে-অর্ডার দেয়। তবে টাকা দেয়নি ফারমার্স ব্যাংক।
রাজনৈতিক বিবেচনায় বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে অনুমোদন পাওয়া নতুন নয়টি ব্যাংকের একটি ফারমার্স ব্যাংক। যার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরুর বছর না ঘুরতেই ঋণ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে ব্যাংকটির প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ঋণ অনিয়ম ধরা পড়ে, যা এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। নিয়মমতো টাকা জমা দিতে না পারায় এক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকে ১৮ কোটি টাকা জরিমানাও দিয়েছে ফারমার্স ব্যাংক।