রীতা কয়রালের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, অনেক দিন ধরেই লিভারের ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সাত দিন আগে শেষ শুটিং করেন। তারপর অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিছুটা সুস্থ হওয়ায় পরে বাসায় চলে আসেন। আজ তাঁর শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়।
সহশিল্পীদের মতে, রীতা কয়রালের দৃঢ় চরিত্রের ছিলেন। শারীরিক কষ্ট সামলে অভিনয় অব্যাহত রাখেন তিনি। টিভি সিরিয়ালে নিয়মিত অভিনয় করতেন। ঋতুপর্ণ ঘোষ আর অঞ্জন দত্তের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন রীতা৷ তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’, ‘বড় বউ’, ‘অসুখ’, ‘গুন্ডা’, ‘জীবন নিয়ে খেলা’, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ প্রভৃতি। ইদানীং স্টার জলসায় ‘রাখি বন্ধন’ সিরিয়ালে নেতিবাচক চরিত্রে তাঁর অভিনয় খুব আলোচিত হয়েছে। পাশাপাশি জি বাংলায় ‘স্ত্রী’ সিরিয়ালের মুখ্য চরিত্র নীরুর মায়ের ভূমিকায়ও অভিনয় করেছেন তিনি।
সাত দিন আগে ‘রাখি বন্ধন’ সিরিয়ালের শেষ শুটিং করেছিলেন রীতা। পর্দার ‘রাখি’ ও ‘বন্ধন’—এই দুই ভাইবোনের ‘দজ্জাল জেঠিমা’র ভূমিকায় অভিনয় করেন রীতা কয়রাল। পর্দায় দুই শিশুর ওপর তাঁর নিত্যনতুন অত্যাচার দেখতে দেখতে দর্শক রেগে যান। আর সেখানেই ছিল রীতার সাফল্য। অভিনয়টা যেন বাস্তব হয়ে উঠত। পর্দায় তিনি যতই নেগেটিভ, বাস্তবে ছিলেন তত পজিটিভ। এমনই মনে করেন পর্দার ‘বন্ধন’ সোহম রায় চৌধুরী।
সাউথ পয়েন্টের ক্লাস সেভেনের ছাত্র সোহম ওরফে ‘বন্ধন’ রীতা আন্টির মৃত্যুর খবর শুনে চলে আসে শুটিং ফ্লোরে। ‘দজ্জাল জেঠিমা’র আড়ালে রীতা মানুষ হিসেবে কেমন ছিলেন? ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সোহম বলল, ‘স্ক্রিপ্ট হাতে পেলেই রীতা আন্টির মধ্যে নেগেটিভ ভাবটা আসত। তার আগে একদম অন্য রকম। কিছু ভুল করলে বলে দিতেন, এটা এভাবে নয়, ওভাবে বল। মেকআপ রুমে গিয়েও অনেক টিপস নিয়েছি।’
আজ সকালে রীতা কয়রালের মেয়ে ফোন করে মায়ের মৃত্যুর খবর টালিগঞ্জপাড়ায় জানান। রীতার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পীমহলে।