সিলেটের শাপলা রাজ্যে ‘অসাধু চক্রের’ নীল ছোবল

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি সিলেট
IMG_4082
হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত সিলেটের জৈন্তাপুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে সাজিয়ে উঠা লাল শাপলার রাজ্য খ্যাত ৪টি বিলে কু-দৃষ্টি পড়েছে অসাধু চক্রখ্যাত শকুনি মামাদের। অসাধু চক্রের নীল ছোবলে ক্ষতবিক্ষত জৈন্তাপুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লাল শাপলার রাজ্য।
চোরাকারবারি, ভূমিখেকো, মৎস্য খেকোদের কবলে পড়ে বিলগুলো মৃতপ্রায়। ফলে আকর্ষন হারাচ্ছেন ভ্রমন পিপাসু সৌন্দর্য্য প্রেমিরা। স্থানীয়দের দাবী ভূমিখেকো, মৎস্যখেকো এবং চোরাকারবারীদের ঠেকাতে পারলে বিল ৪টি হারানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ফিরে পাবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- ডিবির হাওর এলাকার লাল শাপলার রাজ্যের চোরাকারবারি, ভূমিখেকো, মৎস্য খেকোদের কবলে পড়ে ‘ইয়াম বিল, হরফকাটা বিল, কেন্দ্রী বিল ও ডিবি বিল’। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ৪টি বিল মিলে প্রায় ৯ শত একর জায়গা জুড়ে প্রতি বৎসর প্রাকৃতিকভাবে লাল শাপলায় ভরে উঠে। ফলে এলাকায় লাল শাপলার রাজ্যে হিসাবে পরিচিতি পায়।
এদিকে বেসরকারি কয়েকটি টিভি চ্যানেল, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের দূর দূরান্ত হতে বিগত বৎসরে হাজার হাজার পর্যটকের ঢল নেমেছিল বিলগুলোতে।
তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদুর রহমানের আমলে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ করার নামে এলাকাটি চিহ্নিত করা হলে ভুমি খেকোদের তৎপরতা বৃদ্ধিপায়। এরই প্রতিবাদে তৎকালীন সময়ে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ পরিবেশ বাদীরা গ্রাম ও বিল রক্ষার জন্য সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধনসহ আন্দোলনে নামলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবনাটি বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন।
rsz_4-700x336
কিন্তু প্রকল্প বাতিল করা হলেও প্রভাবশালী এক নেতার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ইশারায় কতিপয় ভূমিখেকো চক্র ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ সিলেটের ডিবি হাওরের লাল শাপলার ৪টি বিল দখল বাণিজ্যে মেতে উঠে। পর্যটক বিমুখ করতে এবং নিজেদের ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে বিল গুলোর সৌন্দর্য ধ্বংসের জন্য তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
চলতি বৎসরের শুরু থেকেই বিল গুলোতে যাতে লাল শাপলা তার সৌন্দর্য্য বিস্তার করতে না পারে তাই কৌশল অবলম্বন করে ৩টি চক্র শাপলা বিলে মহিষ নামিয়ে লাল শাপলার গাছ ধ্বংস করছে। পর্যকটদের আনাগোনার কারনে চোরাকারবারীরা তাদের কর্মতৎরতা বাঁধা গ্রস্থ হওয়ায় শাপলা ধ্বংসে তৎপর রয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন বিল গুলোর ইজারা বাতিলের দাবী করায় প্রভাবশালী মৎস্য আহরনকারীরা বিল শুকিয়ে লাল শাপলা ধ্বংস করছে। অপরদিকে মৎস্যজীবিদের নামে বিল গুলো লীজ গ্রহন করে চোরাকারবারীরা তাদের বানিজ্য অব্যাহত রেখেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান চোরাকারবারীরা প্রতিদিন সন্ধ্যা হতে না হতে স্থানীয় ডিবির হাওর রাস্তা ব্যবহার করে ভারত হতে মালামাল পাচার করছে। তারা আরও জানান বিল গুলো সীমান্তবর্তী হওয়ার ফলে চোরাকারবারীরা কৌশলে বিল লিজ গ্রহণ করে নেয়।
বিল পাহারার নামে প্রতিদিন সীমান্তের অপার থেকে মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের কর্মতৎপরতার কারনে সৌন্দর্য্য পিপাসুরা প্রতিনিয়ত লাল শাপলার বিল হতে ফিরে যেতে হচ্ছে। তারা ভূমিখেকো, মৎস্যখেকো এবং চোরাকারবারীদের বন্ধ করলে ডিবির হাওর বলোকার ৪টি বিল (ইয়াম বিল, হরফকাটা বিল, কেন্দ্রী বিল ও ডিবি বিল) প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ফিরে পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *