তারাপীঠ শ্মশান চত্বরে বিকোচ্ছে মানুষের মাথার খুলি। এক-দেড় হাজার টাকা দিলেই শ্মশানের আড়ালে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে।
সেখানেই প্যাকেটবন্দি খুলি চলে আসবে আপনার হাতে। সেই খুলি নিয়েই শ্মশান চত্বরে চলছে তন্ত্রসাধনা। তারাপীঠ শ্মশান চত্বরে একটু ইতিউতি ঘুরলেই আপনি খোঁজ পাবেন খুলির। কারণ, তন্ত্রসাধনায় নর করোটি দরকার। তাই প্রকাশ্যেই তারাপীঠ শ্মশান চত্বরে দেদার বিকোচ্ছে মানুষের মাথার খুলি। এক-দেড় হাজার টাকা দিন। প্যাকেটবন্দি খুলি পেয়ে যাবেন। সেই খুলি নিয়েই শ্মশান চত্বরে তন্ত্রসাধনা হবে। কারণ সাধকদের কথায়, নতুন করোটি ছাড়া সাধনার ফল ভাল হয় না। তবে আপনার পরিচয় বুঝে সেইসব বেচাকেনা হবে। নচেৎ গা ঢাকা দেবেন বিক্রেতা পাটুনিরা।
রাজ্যের অন্যতম মহাশ্মশান তারাপীঠ। তারাপীঠ শ্মশানে রামপুরহাট মহকুমা-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ মৃতদেহ সৎকার করেন। অধিকাংশ মৃতদেহ দাহ করা হলেও অনেকে আবার সমাধি দেন শ্মশান চত্বরে। কিছুদিন পর সেই সমাধি থেকে মৃতদেহের মাথার খুলি তুলে এক থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শ্মশানে আস্তানা গেড়ে থাকা সাধুরা সেই সমস্ত খুলি নিয়ে চালাচ্ছেন তন্ত্রসাধনা। তারাপীঠ শ্মশানের সাধু নীলগিরি মহারাজ। বাড়ি বর্ধমানে। ২২ বছর ধরে তারাপীঠ শ্মশানে আছেন। তিনি বলেন, “আমরা এক-দেড় হাজার টাকা দিয়ে মাথার খুলি কিনে নিই। এখন দুই হাজার টাকাতেও বিক্রি হয়। ওই খুলি দিয়ে তন্ত্রসাধনা করি। তন্ত্রসাধনায় কর্মক্ষেত্রে অনেক ফল পাওয়া যায়। ”
তাঁর কথায়, খুলি কেনার পর সেটিকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করতে হয়। তা না হলে দুর্গন্ধ ছড়াবে। বীরভূমের নামোকান্দা এলাকার বাসিন্দা বর্তমানে শ্মশানের সাধু লালবাবা বলেন, আমরা মড়ার খুলি দিয়ে সাধনা করি। কোনও ভক্তের ভূত ছাড়ানো কিংবা দাম্পত্য কলহ মেটাতে কাজে লাগে মানুষের মাথার খুলি। পাটুনিরা মাথার খুলি বিক্রি করে। তাদের কাছ থেকে কিনে মদ দিয়ে তা পরিষ্কার করতে হয়। মঙ্গল এবং শনিবার মদ দিতে হয়। এছাড়া খুলিতে নিত্যপুজো করতে হয়। তা না হলে নিজেদের বিপদ ডেকে আনবে। কিন্তু এভাবে কি মাথার খুলি তুলে বিক্রি করা যায়? শ্মশানবাসী তন্ত্রসাধক থেকে পাটুনিরা এ বিষয়ে নীরব। তবে প্রশাসনের দাবি, এমন হয় আমাদের তা জানা নেই।