ইরাক ও ইরানের সীমান্তবর্তী কয়েকটি নগর ও জনপদে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে এখন পর্যন্ত ৫৩০ জন মারা গেছেন। রবিবারে আঘাত হানা ভূমিকম্পের কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন এ সংখ্যা হাজারের ঘরে পৌঁছাতে পারে।ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ইরাকে হলেও মৃতের সংখ্যা ইরানেই বেশি দেখা যাচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল জানায়, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩০-এ এসে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়ছেন আরো ৭ হাজার জন। এখনো অনেক লোক নিখোঁজ রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে উভয় দেশে সাত হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এ ছাড়া বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
ঘরবাড়িগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তীব্র শীতে গৃহহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর আরও কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। ফলে আরও আঘাত হানার আশঙ্কায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ রাস্তা ও আশপাশের পার্কে অবস্থান নিয়েছে। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন অনেক মানুষই রাতের খাবার খাচ্ছিল।
স্থানীয় সময় রবিবার রাত ৯টা ২১ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল এবং ইরানের অন্তত ১৪টি প্রদেশেও এ ভূকম্পন অনুভূত হয়। এটি মাটির নিচে ২৩ দশমিক ২ কিলোমিটর গভীর পর্যন্ত আঘাত করে। ফলে ভূমিকম্পটি পার্শ্ববর্তী দেশ কুয়েত, ইসরায়েল ও তুরস্কেও অনুভূত হয়।
ইরানের ভূকম্পনবিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছে, মূল ভূমিকম্পটির পর তাঁরা ১১৮টি পরাঘাত (আফটার শক) রেকর্ড করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ইরান-ইরাকের সীমান্তবর্তী ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৩।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল কুর্দিস্তান অঞ্চলের সুলাইমানিয়া প্রদেশের পেঞ্জভিনে। উৎপত্তিস্থলটি দুই দেশের প্রধান সীমান্তরেখার একেবারেই কাছে এবং কুর্দিস্তানের হালাবজা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। ইউএসজিএস জানায়, উৎপত্তিস্থলের ১০০ কিলোমিটারের (৬০ মাইল) মধ্যে প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে।
ভূমিকম্পটির কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়েছে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় কেরমানশাহ প্রদেশে। শুধু এ প্রদেশে আহতের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। ইরানের একটি সাহায্য সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর অন্তত ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।
সূত্র : গার্ডিয়ান