আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আগে নিজে শুদ্ধ হয়ে পরে অপরকে শুদ্ধ করার কথা বলতে বলেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির ইতিহাস লুটপাট, খুন আর আগুন সন্ত্রাসের ইতিহাস।
বিএনপিকে শুদ্ধ করার জন্য ধৌত করতে হলে বুড়িগঙ্গার পানি আরো ময়লাযুক্ত হয়ে যাবে।
বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, আপনার পাপে পাপে এত পাপ জমে গেছে যে আপনাকে আর শুদ্ধ করা সম্ভব নয়।
ওবায়দুল কাদের আজ বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গত রোববার বিএনপির সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে জাতীয় শ্রমিক লীগের আনন্দ র্যালীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে এ জমায়েত ও আনন্দ র্যালীর আয়োজন করা হয়।
জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান সিরাজ।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরি সভাপতি ফজলুল হক মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যেভাবে নেতিবাচক রাজনীতি আঁকড়ে ধরেছে তাতে তাদের জন্যই অসনিসংকেত অপেক্ষা করছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেই তারা তা টের পাবে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ সংসদ সদস্যের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে বিএনপির এক নেতার বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আসেন চ্যালেঞ্জ করুন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে আইন, গণতন্ত্র ও নির্বাচনের কি সমস্যা।
কাদের বলেন, আপনারা নির্বাচনে এলেন না, নির্বাচন প্রতিহত করতে চেয়ে ব্যর্থ হলেন তার দোষ কি গণতন্ত্রের না নির্বাচনের? যে সংসদ সদস্যরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তারা আইন মেনেই নির্বাচিত হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বৈধতার কোন সংকট নেই। তিনি বলেন, আদালত কি এমন যে বিএনপি কোন মামলা করলেই সে বিষয়ে রায় দিয়ে দেবে। তবে বিএনপিকে যে কোন মূল্যে জেতানোর জন্য একটা পথ আছে, আর সেটা হচ্ছে- আদালত নির্বাচন কমিশনের প্রতি একটি সুয়োমটো রুল জারি করতে পারেন। আর তাহলেই বিএনপি খুশি হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে যে ভাষণ বাজানোর জন্য শত শত নেতা-কর্মীকে অকথ্য নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে সে ভাষণ এখন সারা বিশ্বের সম্পদ। বঙ্গবন্ধুকে যত ছোট করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তিনি তত বড় হয়েছেন। ইতিহাসের মহানায়কের পাশে ফুটনোটকে যেমন বসানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তেমনি স্বাধীনতার ঘোষকের পাশের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রের পাঠককে বসানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ মুক্তির সংগ্রামে যেমন বিস্ময় তেমনি তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন, অর্জন ও সমৃদ্ধিতে বিস্ময় ও উন্নয়নের রোল মডেল।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে যে ফায়দা লুটেছেন তার জন্য তিনি ক্ষমা চাননি।
বিএনপির রাজনীতি মিথ্যাচার ও প্রতিহিংসার ওপর প্রতিষ্ঠিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি (বেগম জিয়া) প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই পাকিস্তানের নির্দেশে ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিনের কেক কাটেন।
হানিফ আরো বলেন, গ্রেনেড হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন তা স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেই দেশের মানুষ আপনার কথায় বিশ্বাস করত।