রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাস চালাচ্ছে ছাত্রলীগ?

Slider রাজশাহী

8df29cda481bd0eddd05bb300fb1c52c-5a07bbd4a984d

 

 

 

 

রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের ওপর কর্তৃপক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এই ছাত্রাবাসের সাতটি ব্লক এখন নিয়ন্ত্রণ করছে ছাত্রলীগ। বাধ্য হয়ে ছাত্রাবাসের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাস ছেড়ে চলে গেছেন। ছাত্রাবাস ছেড়ে আসা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে তাঁরা মেসে উঠেছেন।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৮৯৯ সালে পুঠিয়ার মহারানি হেমন্তকুমারী দেবীর আর্থিক অনুদানে হেমন্তকুমারী হিন্দু ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সালের মধ্যে ছয় ব্লকবিশিষ্ট দ্বিতল হোস্টেল নির্মাণ করা হয়। ষাটের দশকে নিউ ব্লক নামে অপর একটি ত্রিতল হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হয়। একসঙ্গে এই সাতটি ব্লকের নাম দেওয়া হয় রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাস। সব মিলিয়ে এতে ৫১২ জন ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা হয়েছে। এই সাতটি ব্লক থেকে ছয় মাস ধরে শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে এ, ই ও এফ ব্লকের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই তিনটি ব্লক থেকে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই চলে গেছেন। একজন বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাস ছেড়ে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছাত্রলীগের নেতারা তাঁদের অনুগত ছাত্রদের ওঠাচ্ছেন। তাঁদের ভাড়া ছাত্রলীগ নেতারাই আদায় করছেন।

অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের নেতারা ব্লকগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন। অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করেন ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি নূর মোহাম্মদ ওরফে সিয়াম ও বাকি অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান। তবে অভিযোগ রয়েছে, নাইমুল হাসানের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্লকগুলোতে অবৈধ দখলদার বেশি। ছাত্রলীগের নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গত ঈদুল ফিতরের বন্ধের দুই দিন আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ মুসলিম ছাত্রাবাস খালি করে দেয়। ঈদের ছুটির পর শুধু বৈধ ছাত্রদের ছাত্রাবাসে তোলার কথা ছিল, কিন্তু ঈদের পর আবার একইভাবে ছাত্রলীগের নেতারা ছাত্রাবাস দখলে নিয়ে নেন। এরপর থেকে কলেজের তত্ত্বাবধায়কেরাও আর ঠিকমতো অফিস করেন না।

গত বছরের মাঝামাঝি বি ব্লকের ৪ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের কর্মীরা অগ্নিসংযোগ করেন। ছয় মাস ধরে ওই কক্ষটি তালাবদ্ধ ছিল। এখন ওই কক্ষে ছাত্রলীগের একজন নেতা একাই থাকেন। ছাত্রাবাস ত্যাগ করে আসা ছাত্ররা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা সাধারণ ছাত্রদের কাছে গিয়ে যখন-তখন চাঁদা দাবি করেন। এই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছাত্ররা ছাত্রাবাস ছাড়ছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি নূর মোহম্মদ বলেন, তিনি ছাত্রাবাসের পরিবেশ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছেন। তিনি দাবি করেন, যে ব্লকগুলো তিনি দেখাশোনা করেন, সেগুলোতে এ ধরনের অভিযোগ নেই। কথা বলার জন্য সম্পাদক নাইমুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

কলেজের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক হুমায়ূন রেজা বলেন, মুসলিম ছাত্রাবাসের এ, ই এবং এফ ব্লকে অনিয়ম বেশি হচ্ছে। তাঁরা ঈদের পর একদিন রাতে ব্লকগুলোতে তল্লাশি চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ৩০ জন শিক্ষক জড়ো করেছিলেন, কিন্তু পুলিশ পাননি। এ জন্য অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। তাঁরা ছাত্রাবাসের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাঁর থাকার ব্যবস্থা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *