দিনের শুরুতে এক কাপ চা না পেলে কেমন যেন হাঁপিয়ে ওঠে শরীরটা। কিন্তু কী চা পান করেন সকাল সকাল? দুধ চা হলে ক্ষণিকের জন্য মনটা চনমনে হয়ে ওঠে ঠিকই, কিন্তু শরীরের কোনো উপকারই হয় না।
আর যদি এক পেয়ালা লাল চা খেতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই! এ ক্ষেত্রে মন তো চাঙা হয়ে ওঠেই, সেই সঙ্গে শরীরেরও একাধিক উপকার হয়। তাই যারা লাল চা আদৌ স্বাস্থ্যকর কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাদের বক্তব্যের মধ্যে যেকোনো যুক্তি নেই তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, লাল চায়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরে ক্লান্তি দূর করার পাশপাশি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। লাল চায়ে থিয়োফিলাইন নামে একটি উপাদান থাকে। এটি শরীরকে সার্বিকভাবে চাঙা করতে দারুণ কাজে দেয়। সেই সঙ্গে আরো অনেক উপকারে লাগে।
১. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
একদম ঠিক শুনেছেন। প্রতিদিন কয়েক কাপ লাল চা আপনাকে এই মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। আসলে এই পানীয়তে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ সহ এমন কিছু উপাদান, যা লাং, প্রস্টেট, কলোরেকটাল, ব্লাডার, ওরাল এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
শুধু তাই নয়, লাল চা শরীরের যে কোনও অংশে ম্যালিগনেন্ট টিউমারের বৃদ্ধি আটকাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
নানাবিধ অসুস্থতার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটা একান্ত প্রয়োজন। আর এ ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে লাল চা। এখানেই শেষ নয়, এই পানীয়তে টেনিস নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা নানা ধরনের ক্ষতিকর ভাইরাসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে সহজে কোনো রোগ ছুঁতে পারে না।
৩. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
লাল চায়ে ক্যাফিনের পরিমাণ কম থাকায় এই পানীয়টি মস্তিষ্কে রক্তচলাচলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্ট্রেস কমে। প্রসঙ্গত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে এক মাস টানা যদি লাল চা খাওয়া যায়, তাহলে পারকিনস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
৪. ওজন হ্রাস করে
লাল চা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগই পায় না। তাই আপনি যদি ওজন কমাতে বদ্ধপরিকর হন, তাহলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন এই পানীয়।
৫. হার্ট চাঙা হয়ে ওঠে
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে লাল চায়ের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই পানীয়তে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমিয়ে দেয়। প্রসঙ্গত, স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতেও লাল চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. হাড়কে শক্তপোক্ত করে
লাল চায়ে উপস্থিত ফাইটোকেমিকালস হাড়কে শক্ত করে। ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়
প্রতিদিন লাল চা খেলে হজম ক্ষমতা ভাল হতে শুরু করে। আসলে এতে রয়েছে টেনিস নামে একটি উপাদান, যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশপাশি গ্যাস্ট্রিক এবং নানা ধরনের ইন্টেস্টিনাল রোগ সরাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. স্ট্রেস কমায়
লাল চায়ে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড, যা স্ট্রেস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে মনকে চনমনে করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৯. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত লিকার চা খেলে শরীরে কারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশানে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে লিকার চায়ের মতো গ্রিন টি খেলেও একই উপকার মেলে। দৈনিক ৩-৪ কাপ এই পানীয় খেতে পারলে এলডিএল কোলেস্টরলের মাত্রা চোখে পড়ার মতো কমে যায়।
১০. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়
চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের অন্দরের থাকা কোষেদের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, ছানির প্রকোপ কামতেও লালা চা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।