আলোর প্রচারের তলায় জমাট বাঁধা ঘন অন্ধকার। এমনই বাস্তব, যেখানে গরিবির জ্বালায় আর নিজেকেই বেচার বিজ্ঞাপন দিতে হয় তরুণীকে। লোকসভা ভোটের প্রচারে গুজরাট মডেলে ‘উন্নয়নের’ ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশের মসনদে বসেছেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেই মডেল আসলে কতটা কার্যকরী, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল চাঁদনি রাজগৌরের কাহিনী। শয্যাশায়ী মা-বাবার চিকিত্সার খরচ আর পেটের জ্বালা মেটাতে ফেসবুকে নিজেকে ‘বিক্রির জন্য’ বিজ্ঞাপন দিয়েছেন গুজরাটের বদোদরা জেলার এই তরুণী। প্রশ্ন উঠছে, চাঁদনির ঘটনা কি বিচ্ছিন্ন, না সামগ্রিক পরিস্থিতির একটা চিহ্ন মাত্র!
ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে ওই পোস্টটিতে চাঁদনি জানিয়েছেন, তাঁর মা পক্ষাঘাতের কারণে বহুদিন ধরেই অসহায়। আর, সপ্তাহখানেক আগে পিছলে পড়ে গিয়ে তাঁর বাবাও পা ভেঙেছেন। তাঁদের দেখাশোনা করার জন্য চব্বিশ ঘণ্টা চাঁদনিকে বাড়িতে থাকতেই হয়। বাবাই ছিলেন পরিবারের রোজগেরে সদস্য। ‘জীবনধারণের কোনো সংস্থান নেই। তাই ভারতের এই মেয়ের কাছে এখন একটাই উপায় রয়ে গিয়েছে। তা হল, নিজেকে বেচে দেওয়া। সম্পর্ক করুন। চাঁদনি এখন বিক্রির জিনিস’, এ কথাই লিখেছেন ওই তরুণী। মনে রাখা ভালো, লোকসভা ভোটে বারাণসীর পাশাপাশি বদোদরা থেকেও প্রার্থী হয়েছিলেন মোদি।
গত ২৫ নভেম্বর ফেসবুকে দেওয়া চাঁদনির ওই পোস্টের জেরে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় সংবাদপত্রে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি হয়। চাঁদনি বলেন, ‘আমি লজ্জিত। কিন্তু কোনো উপায় ছিল না। আশা করি, এই চূড়ান্ত পদক্ষেপের জেরে সরকার আমার অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলের কাছে সাহায্যের অনুরোধ জানাচ্ছি।’ চাঁদনি এ-ও বলেন, ফেসবুক দেখে অনেকেই ফোন করেছে। সাহায্য করা নয়, অধিকাংশ লোকের উদ্দেশ্য ছিল আমার পরিস্থিতির ফায়দা লোটা।
রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি বলেন, এই ঘটনা শুনেও শিউরে উঠতে হয়। দুঃখজনক বাস্তব। সরকার যেন গান্ধীজির কথা ভুলে না যায়। গরিব মানুষের দুঃখকষ্টের কথাটা সরকার যেন প্রত্যেকটি নীতি প্রণয়ণের সময় মাথায় রাখে।’ আর এক কংগ্রেস সাংসদ রাজীব সাতভের কথায়, এই ভয়াবহ ঘটনা ফের প্রমাণ করল, মোদি যে গুজরাট মডেলের কথা বলেছিলেন, তা শুধু মার্কেটিং আর মিথ্যা প্রচার মাত্র। মহারাষ্ট্র সহ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় মানবসম্পদ সূচকে গুজরাট অনেক নিচে। এদিকে, বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে ফেসবুক থেকে চাঁদনির অ্যাকাউন্টটাই কে-বা-কারা উড়িয়ে দিয়েছে। চাঁদনি নিজেই সে কাজ করেছেন কি না, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিজেকে বিজেপিকর্মী বলে দাবি করেছিলেন ওই তরুণী, যা রাজ্যের বিজেপি সরকারের কাছে খুব স্বস্তির বিষয় নয়।
কিন্ত্ত ঘটনা হল, বৈদ্যুতিন মিডিয়া এ নিয়ে সরব হওয়ার পরেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসার লক্ষণ দেখায়। তা-ও নাক কুঁচকে। গুজরাটের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীলাবেন আঙ্কোলিয়ার কথায়, ‘চাঁদনি ভুল পথ নিয়েছেন। উনি আগেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন। তিনি নিজে গিয়ে চাঁদনির সঙ্গে দেখা করবেন কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে লীলার বক্তব্য, সে রকম হলে, আমাদের প্রতিনিধিরা ওঁর বাড়িতে যাবেন। তবে উনি তো সিভিল হাসপাতালে মা-বাবার চিকিত্সা করাতে পারতেন। আমরা এ ব্যাপারে ওঁকে সাহায্য করব। গুজরাটের পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রী নীতিন প্যাটেল-ও বলেন, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিত্সার ব্যবস্থা রয়েছে। ঘর থেকে বেরোতে না পারলে, হেল্পলাইনে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে পারতেন।
তবে সমাজকর্মী শবনমের দাবি, সাড়াটা আগে প্রশাসনের তরফেই আসা উচিত ছিল। তাঁর বক্তব্য, মিডিয়ায় হইচই না-হলে প্রশাসনিক কর্তারা কোনো পদক্ষেপই নেন না। কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদ এঁদের আমরা কী করতে নির্বাচিত করি? নিজেদের এলাকায় কত গরিব, বেকার, বয়স্ক বা পেনশনভোগী মানুষ রয়েছেন, সে তথ্য তো তাঁদের রাখা উচিত, এবং সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অভিমানী’ চাঁদনিও বললেন, সাহায্যের আশ্বাস তখনই এল, যখন লজ্জাজনক পদক্ষেপ করলাম। আমারও আত্মসম্মান রয়েছে। কয়েকজনের সাহায্যে স্থানীয় হাসপাতালে বাবার চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু পরে মা-বাবাকে চেক-আপ করাতে নিয়ে যেতেও তো আমাকে লাগবে। ঘরে বসে কিছু আয়ের ব্যবস্থা হলে ভালো হত। নীতিনের পাল্টা যুক্তি, মহিলাদের জন্য আমাদের স্বরোজগার যোজনা আছে। কিন্তু ওঁকে উদ্যোগটা তো নিতে হবে!
ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে ওই পোস্টটিতে চাঁদনি জানিয়েছেন, তাঁর মা পক্ষাঘাতের কারণে বহুদিন ধরেই অসহায়। আর, সপ্তাহখানেক আগে পিছলে পড়ে গিয়ে তাঁর বাবাও পা ভেঙেছেন। তাঁদের দেখাশোনা করার জন্য চব্বিশ ঘণ্টা চাঁদনিকে বাড়িতে থাকতেই হয়। বাবাই ছিলেন পরিবারের রোজগেরে সদস্য। ‘জীবনধারণের কোনো সংস্থান নেই। তাই ভারতের এই মেয়ের কাছে এখন একটাই উপায় রয়ে গিয়েছে। তা হল, নিজেকে বেচে দেওয়া। সম্পর্ক করুন। চাঁদনি এখন বিক্রির জিনিস’, এ কথাই লিখেছেন ওই তরুণী। মনে রাখা ভালো, লোকসভা ভোটে বারাণসীর পাশাপাশি বদোদরা থেকেও প্রার্থী হয়েছিলেন মোদি।
গত ২৫ নভেম্বর ফেসবুকে দেওয়া চাঁদনির ওই পোস্টের জেরে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় সংবাদপত্রে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি হয়। চাঁদনি বলেন, ‘আমি লজ্জিত। কিন্তু কোনো উপায় ছিল না। আশা করি, এই চূড়ান্ত পদক্ষেপের জেরে সরকার আমার অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলের কাছে সাহায্যের অনুরোধ জানাচ্ছি।’ চাঁদনি এ-ও বলেন, ফেসবুক দেখে অনেকেই ফোন করেছে। সাহায্য করা নয়, অধিকাংশ লোকের উদ্দেশ্য ছিল আমার পরিস্থিতির ফায়দা লোটা।
রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি বলেন, এই ঘটনা শুনেও শিউরে উঠতে হয়। দুঃখজনক বাস্তব। সরকার যেন গান্ধীজির কথা ভুলে না যায়। গরিব মানুষের দুঃখকষ্টের কথাটা সরকার যেন প্রত্যেকটি নীতি প্রণয়ণের সময় মাথায় রাখে।’ আর এক কংগ্রেস সাংসদ রাজীব সাতভের কথায়, এই ভয়াবহ ঘটনা ফের প্রমাণ করল, মোদি যে গুজরাট মডেলের কথা বলেছিলেন, তা শুধু মার্কেটিং আর মিথ্যা প্রচার মাত্র। মহারাষ্ট্র সহ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় মানবসম্পদ সূচকে গুজরাট অনেক নিচে। এদিকে, বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে ফেসবুক থেকে চাঁদনির অ্যাকাউন্টটাই কে-বা-কারা উড়িয়ে দিয়েছে। চাঁদনি নিজেই সে কাজ করেছেন কি না, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিজেকে বিজেপিকর্মী বলে দাবি করেছিলেন ওই তরুণী, যা রাজ্যের বিজেপি সরকারের কাছে খুব স্বস্তির বিষয় নয়।
কিন্ত্ত ঘটনা হল, বৈদ্যুতিন মিডিয়া এ নিয়ে সরব হওয়ার পরেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসার লক্ষণ দেখায়। তা-ও নাক কুঁচকে। গুজরাটের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীলাবেন আঙ্কোলিয়ার কথায়, ‘চাঁদনি ভুল পথ নিয়েছেন। উনি আগেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন। তিনি নিজে গিয়ে চাঁদনির সঙ্গে দেখা করবেন কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে লীলার বক্তব্য, সে রকম হলে, আমাদের প্রতিনিধিরা ওঁর বাড়িতে যাবেন। তবে উনি তো সিভিল হাসপাতালে মা-বাবার চিকিত্সা করাতে পারতেন। আমরা এ ব্যাপারে ওঁকে সাহায্য করব। গুজরাটের পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রী নীতিন প্যাটেল-ও বলেন, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিত্সার ব্যবস্থা রয়েছে। ঘর থেকে বেরোতে না পারলে, হেল্পলাইনে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে পারতেন।
তবে সমাজকর্মী শবনমের দাবি, সাড়াটা আগে প্রশাসনের তরফেই আসা উচিত ছিল। তাঁর বক্তব্য, মিডিয়ায় হইচই না-হলে প্রশাসনিক কর্তারা কোনো পদক্ষেপই নেন না। কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদ এঁদের আমরা কী করতে নির্বাচিত করি? নিজেদের এলাকায় কত গরিব, বেকার, বয়স্ক বা পেনশনভোগী মানুষ রয়েছেন, সে তথ্য তো তাঁদের রাখা উচিত, এবং সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অভিমানী’ চাঁদনিও বললেন, সাহায্যের আশ্বাস তখনই এল, যখন লজ্জাজনক পদক্ষেপ করলাম। আমারও আত্মসম্মান রয়েছে। কয়েকজনের সাহায্যে স্থানীয় হাসপাতালে বাবার চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু পরে মা-বাবাকে চেক-আপ করাতে নিয়ে যেতেও তো আমাকে লাগবে। ঘরে বসে কিছু আয়ের ব্যবস্থা হলে ভালো হত। নীতিনের পাল্টা যুক্তি, মহিলাদের জন্য আমাদের স্বরোজগার যোজনা আছে। কিন্তু ওঁকে উদ্যোগটা তো নিতে হবে!