মেনোপজ বা রজঃ নিবৃত্তি মানে সবকিছু শেষ নয়, বরং নতুন করে শুরু। ৪৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে নারীদের এই পরিবর্তন শুরু হয়। এ সময় ডিম্বাশয় ডিম্বাণু তৈরির ক্ষমতা হারাতে থাকে, হরমোনের ঘাটতি হয় এবং মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। ৫০ বছর বা তারপরে মাসিক বন্ধ হলে তা স্বাভাবিক মেনোপজ, ৪০ বছরের আগে হলে প্রিম্যাচিউর মেনোপজ আর যদি অস্ত্রোপচারের কারণে মাসিক বন্ধ হয় তাকে বলে সার্জিক্যাল মেনোপজ।
উপসর্গ
হট ফ্লাশ মানে হঠাৎ শরীরের বিভিন্ন অংশ গরম-গরম বোধ হওয়া, হঠাৎ রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, প্রচুর ঘাম, মনমেজাজের নিয়ন্ত্রণহীনতা, বিষণ্নতা, অবসাদ এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অন্যতম একটি সমস্যা হলো খিটখিটে মেজাজ এবং অল্পতে রেগে যাওয়া। যোনিপথের শুষ্কতা, বারবার প্রস্রাব হওয়া এবং প্রস্রাব জমে আছে বলে মনে হওয়া-জাতীয় সমস্যা হতে পারে। মেনোপজের পর বারবার প্রস্রাব সংক্রমণ হতে পারে।
জটিলতা
নারীদের মেনোপজের পর নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা বিষয়ে সচেতন হতে হবে। যেমন: এ সময় হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস শুরু হয়। প্রস্রাব ধরে রাখার সমস্যা ও সংক্রমণ হয় বেশি। মেনোপজের পর নারীদের হৃদ্রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গিয়ে পুরুষের সমান হয়ে যায়। ওজন বেড়ে যেতে পারে। যৌন সম্পর্কে সমস্যা হতে পারে।
তাই মেনোপজের পর নিজের দিকে আলাদা করে নজর দেওয়া জরুরি। কোনো সমস্যা প্রকট মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হট ফ্লাশ কমানোর জন্য নানা ধরনের চিকিৎসা আছে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি খান। সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন। হৃদ্রোগের ঝুঁকিগুলো (রক্তের শর্করা, চর্বি ইত্যাদি) পরীক্ষা করুন ও কমান। স্তন বা জরায়ুর রস স্ক্রিনিং পরীক্ষা করুন নিয়মিত। শরীরের পরিবর্তনগুলো স্বাভাবিকভাবে নিন।
সহকারী অধ্যাপক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল