সৌদি আরবের মক্কায় মসজিদ আল-হারামের ভেতরে যে জমজম কূপ আছে, সেখানে ব্যাপক সংস্কারের এক কাজ হাতে নিয়েছে সে দেশের কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ জমজম কুয়ার পানিকে অত্যন্ত পবিত্র ও অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন বলে মনে করেন।
প্রতিবছর যে লাখ লাখ মুসলিম তীর্থযাত্রী সৌদি আরবে যান, তাদের বেশির ভাগই জমজমের পানি নিয়ে দেশে ফেরেন।
মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, হাজার হাজার বছর আগে আল্লাহ্ এই কুয়াটি সৃষ্টি করেছিলেন ইব্রাহিমের স্ত্রী ও সন্তানদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য।
হযরত ইব্রাহিমের স্ত্রী ও সন্তানরা যখন মরুভূমিতে তৃষ্ণার্ত ও অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন, তখন এই জমজমের কুয়ার পানিই তাদের প্রাণে বাঁচিয়েছিল বলে মনে করা হয়।
মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদের পরিচালনার দিকটি দেখাশুনো করে যে প্রেসিডেন্সি, তার চেয়ারম্যান শেখ আবদুল রহমান আল সুদায়েস জানিয়েছেন জমজমের কুয়া মেরামতে প্রায় সাত মাস মতো সময় লাগবে।
তবে আগামী বছর রমজানের আগেই এই সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
মুসলিমদের কাছে অতি পবিত্র কাবা থেকে এই জমজমের কুয়ার দূরত্ব মাত্র কুড়ি মিটারের মতো।
নতুন যে সংস্কার করা হচ্ছে, তাতে কুয়ার কাছে পৌঁছানোর সুযোগ বাড়বে, তাছাড়া তার আশেপাশের এলাকাকেও জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘সৌদি গেজেট’ সংবাদপত্র জানাচ্ছে জমজমের কুয়াকে বিশ্বের প্রাচীনতম কুয়া বলে ধারণা করা হয়, কারণ গত পাঁচ হাজার বছর ধরে এখান থেকে একটানা পানি পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও এই কুয়াটি মাত্র তিরিশ মিটার গভীর, তারপরেও এটি প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে আঠারো লিটার পানি পাম্প করতে পারে।
সৌদি আরবের জিওলজিক্যাল সার্ভের একটি জমজম স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার আছে, যারা এই পানির কুয়ার মান, গভীরতা, অম্লতার মাত্রা বা তাপমাত্রার দিকে নিয়মিত নজর রাখে।
প্রতিদিন ট্যাঙ্কারে করে অন্তত ১২০ টন জমজমের পানি মদিনার আল মসজিদ আল নববি’র জলাধারে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিবহনের সময় সেই পানি যাতে কোনোভাবে দূষিত না হয়, সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়ে থাকে।
– বিবিসি বাংলা