সংবিধান কাটা ছেঁড়ার পরও এই বিধান এখনো আছে যে, বাংলাদেশের সকল নাগরিক সমান। আইন সকলের জন্য এক। আইনের উপরে কেউ নেই। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক আইন দ্বারা পরিচালিত। সংবিধান সবচেয়ে বড় আইন। এ কথা গুলো আমাদের সংবিধান বলে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সংবিধানের কিছু মৌলিক অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করা দরকার। যেমন প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষেত্রে আইন ভিন্ন পথে চলে। তারা কোন অপরাধ করলে আইন সমান ভাবে প্রয়োগ হয় না। এ ক্ষেত্রে সকল নাগরিক সমান এটা সঠিক নয়। তাই আমাদের সংবিধানে আরো সংশোধনী দরকার। যাতে প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তি ও পদের ক্ষেত্রে আইন সমান না হয়।
আমাদের ইতিহাস বলে, প্রধানমন্ত্রী কোন ঘটনা তদন্তাধিন থাকা অবস্থায় এমন মন্তব্য করেন যে, তদন্ত কি হবে তার পরিস্কার হয়ে যায়। তবে এই ধরণের মন্তব্য সাধারণ নাগরিক করলে আইন অমান্য হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকলেও গ্রেফতার হয় না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ প্রধান বলেন, গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকলেই গ্রেফতার করতে হবে না, তাকে আদালতে যেতে দিতে হবে।
রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি দূর্নীতির তদন্ত বন্ধে নোটিশ দিতে পারেন। অপরাধ হয় না। দূর্নীতির বোঝা মাথায় নিয়ে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করা যায় আইনগত সমস্যা হয় না।
এ ছাড়া অসংখ্য ঘটনা আছে যা আইন দ্বারা বাধিত হয় না। অথচ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী একজন নাগরিককে তুলে নিয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগও থাকে না। ওই সকল হতভাগা নাগরিক আটকের পর জীবিত না মৃত তারও হদিস থাকে না অনেক সময়। তার পরিবার জানতেও পারে না তাদের লোকটি জীবিত না মৃত। অথচ আইন আছে, কোন নাগরিককে গ্রেফতারের সময় গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে। গ্রেফতারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিকটবর্তি কোন আদালতে উপস্থিত করতে হবে। এ সব বিধি বিধান কাগুজে হয়ে গেছে এখন। কারণ গ্রেফতার বা আটকের পর ভিকটিম অনেক সময় অনিশ্চিত হয়ে যায়। কখনো লাশ পাওয়া যায় আবার নিঁখোজও হয়ে যায় বছরের পর বছর। অনেককে আবার বেশ দিন পর আদালতে হাজির করা হয়।
সুতরাং রাষ্ট্রের সকল নাগরিক সমান এটা ঠিক নয়। আর আইন সকলের ক্ষেত্রে এক এটাও পরিস্কার নয়। তাই সকল নাগরিককে প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির মত মর্যাদা দিতে হবে, না হয় সংবিধান সংশোধন করে নাগরিক বৈষম্য স্পষ্ট করতে হবে। না হলে সংবিধান অর্থহীন হয়ে পড়তে পারে।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম