সন্ত্রাসদীর্ণ সোয়াট উপত্যকা থেকে রূপকথার উত্থান তাঁর। একটা ছোট্ট মেয়ের ব্লগেই সারা পৃথিবী জেনেছিল তালিবানি সন্ত্রাসের নির্মম রুপটি।
সে কথা ফাঁস করে গুলি খেতে হয়েছিল কিশোরীটিকে। তবে শান্তি ও বাক স্বাধীনতার জন্য যে লড়াই তিনি করেছিলেন তার স্বীকৃতি দেয় নোবেল কমিটি। তবে তাঁকে নিয়ে বিতর্কও কম নয়। সম্প্রতি সে বিতর্ক আবার উসকে দিল একটি ছবি, যে ছবিটিকে মালালার ছবি বলেই মনে করা হচ্ছে। আর জিনস পরা পশ্চিমী পোশাকের মালালাকে দেখে তোলপাড় নেটদুনিয়া।
মালালর সাহস, লড়াই, বাক স্বাধীনাতর পক্ষে লড়াই এবং সর্বোপরি শান্তির বার্তা নোবেলের স্বীকৃতি পেয়েছিল। তাঁর বই গোটা দুনিয়ায় বেস্টসেলার। এক কিশোরী সাহসিনীর লড়াই তথা বলিষ্ঠ মতামত যেভাবে মালালা দুই মলাটে বন্দি করেছিলেন, তা অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণার উৎস। তবে মালালাকে নিয়ে বিশ্ববাসীর একাংশ বেশ সন্দেহপ্রবণ।
তাঁর ব্লগ থেকে শুরু করে তাঁর কাজকর্ম সবকিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখেন তাঁরা। এমনকী মালালা আমেরিকারই ‘সৃষ্টি’ বলে দাবি ওই অংশের। এই মালালাকেই নিয়েই ফের তোলপাড় নেটদুনিয়া।
সম্প্রতি একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে জিনস-টপ পরে দেখা যাচ্ছে মালালাকে। যদিও এ ছবি পাক কন্যার কিনা তা এখনই নিশ্চিত করা যায়নি। তবে নিশ্চিতকরণের আগেই ছবি ঘিরে শুরু হয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পালা। মূলত এক পাকিস্তানি ফেসবুক গ্রুপে এ ছবি ছড়াতে থাকে। এবং সেখানে বলা হয়, মালালা ধর্মবিরোধী কাজ করেছেন। জিনস পরে মালালা ইসলামকে অপমান করেছেন। এমনকী দ্বিচারিতা করছেন ও আদৌ মালাল ইসলাম ধর্মাবলম্বী কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
নীতিপুলিশের এই বাড়াবাড়ি দেখে এগিয়ে আসেন বহু নেটিজেন। তাঁদের প্রশ্ন, এক কিশোরী, যিনি আবার বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন, তিনি যদি পশ্চিমী পোশাক পরেই থাকেন, তবে তাতে আপত্তি কোথায়? মালালাকে যে ধরনের পোশাকে দেখতে সকলে অভ্যস্ত এ ছবি তার থেকে নিঃসন্দেহে আলাদা। কিন্তু গোটা বিশ্বে বহু যুবতীই জিনস পরেন। মালালা পরলে আপত্তি কোথায়? বরং পশ্চিমী পোশাক পরেও যেভাবে তিনি স্কার্ফে মাথা ঢেকে রেখেছেন, তা ইসলামের প্রতি তাঁর আনুগত্যের প্রতীক বলেই মনে করছেন এনেকে। যদিও মালালার থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এ ছবি তাঁর নয় বলে অস্বীকারও করেননি তিনি। আপাতত তাঁকে ঘিরেই মন্তব্য-পালটা মন্তব্যে সরগরম নেটদুনিয়া।