রূপালী ব্যাংকের বহিষ্কৃত সিবিএ নেতাদের সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। আজ রোববার দুপুরে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে সিবিএ নেতাদের নিয়ে আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
ব্যাংকটির চতুর্থ তলায় এ সভা হলেও উচ্চ স্বরের কারণে ব্যাংকের পুরো কার্যালয়ে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ব্যাংকের নিচতলায় লেনদেন কার্যক্রম চলছিল।
আলোচনায় শাজাহান খান বলেন, ‘গোড়ায় হাত দিলে অনেকের অনেক কিছু বের হয়ে যাবে। প্রধান বিচারপতির ঘটনা সবার জানা আছে। এ প্রতিষ্ঠানেরও অনেক কিছু বের হবে। সিবিএ নেতাদের সঙ্গে যে সমস্যা হয়েছে, তার সম্মানজনক সমাধান করুন।’
শাজাহান খান ব্যাংকে গেলেও ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেননি। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান ওই সময় ব্যাংকে ছিলেন না।
সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, ‘উনি (মন্ত্রী) আমাদের নেতা, হঠাৎ করেই এসেছিলেন। আমাদের সঙ্গে ব্যাংক যে সমস্যা করেছে, তার সম্মানজনক সমাধানের নির্দেশ দিয়ে গেছেন।’
গত জুলাইয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ব্যাংকটির কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও এক অফিস সহকারীকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে ব্যাংকটি। এ ছাড়া একজনকে বাধ্যতামূলক অপসারণ ও চার সিবিএ কর্মীকে পদাবনতিসহ রাজধানীর বাইরে বদলি করা হয়েছে।
রূপালী ব্যাংক সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম), উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও সহকারী মহাব্যবস্থাপককে লাঞ্ছিত করেন সিবিএ নেতারা। সিবিএ অপর পক্ষের নেতা মহিউদ্দিন স্থানীয় শাখায় যোগ দিতে গেলে তাঁদের লাঞ্ছিত করে মোস্তাক-কাবিল নেতৃত্বাধীন গ্রুপটি। নিজ কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তাঁদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের নাম হাজিরা তালিকা থেকে মুছে ফেলে ও অনুস্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক কাবিল হোসেন কাজী ও কাপ্তান বাজার শাখার অফিস সহকারী আরমান মোল্লাকে বরখাস্তের সুপারিশ করে। তাঁদের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁদের বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয় প্রধান কার্যালয়ের সংস্থাপন ও কল্যাণ বিভাগের গাড়িচালক আবুল কালাম আজাদকে।
পাশাপাশি স্থানীয় কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন, ভিজিল্যান্স অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স বিভাগের অফিস সহকারী মনিরুল ইসলাম, শিল্প ঋণ বিভাগের অফিস সহকারী সাব্বির আহমেদ ভূঁইয়াকে পদাবনতিসহ রাজধানীর বাইরে বদলি করা হয়েছে।