চলতি সফরের শুরুতে মনে হচ্ছিল যেন ব্যাটিং ভুলে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এরপর ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফির নেতৃত্বে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার হলো।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অপরাজিত সেঞ্চুরির (১১০*) দেখা পেলেন বিতর্কে জর্জরিত টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৮ রান তুলল বাংলাদেশ। কিন্তু ৩০০ রানের কম সংগ্রহ নিয়ে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে লড়াই করা একটু কঠিন। সে কারণেই বোলারদের ওপর চাপ বেড়ে গেল। বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে অধিনায়ক মাশরাফিকেই।
কিম্বার্লিতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মাশরাফি বিন মুর্তজার বাংলাদেশ। প্রায় দুই বছর পর ইনিংস শুরু করতে নেমে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাস। কিন্তু শুরুটা ভালো হলেও ওপেনিং জুটিটা বড় হলো না বাংলাদেশের। দারুণ খেলতে খেলতেই লেংথে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া দারুণ ডেলিভারি লিটনের (২১) ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ল স্লিপে দাঁড়ানো ফাফ দু প্লেসির হাতে।
থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা করলেন।
লিটন আউট হওয়ার পরই তিন নম্বরে চমক দেখিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২২ গজে ধুঁকছিলেন ইমরুল। ইমরান তাহিরের ঘূর্ণিতে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান একবার। শেষ পর্যন্ত প্রিটোরিয়াসের শর্ট বলে বাজে শটে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ৩১ রানে ফিরেন তিনি।
এরপর ৫৯ রানের জুটি গড়ে বিপদ সামাল দেন সাকিব এবং মুশফিক। ভালো খেলতে খেলতে ইমরান তাহিরের বলে হাশিম আমলার হাতে ধরা পড়েন সাকিব (২৯)। এরপর ভায়রা ভাই মুশফিকের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। প্রিটোরিয়াসের শিকার হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ২৬। সাব্বির এসে একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে রাবাদার বলে ফিরলেন ১৯ রান করে।
এরপরেই ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম। ১০৮ বলে ১০ চার এবং ২ ছক্কায় তিন অংকে পৌঁছান তিনি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১০৭) হাঁকিয়েছিলেন মুশফিক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। স্লগ ওভারে ভরসা দিতে পারেননি অনেকদিন পর ওয়ানডে খেলতে নামা নাসির হোসেন (১১)। অভিষিক্ত সাইফউদ্দিন রাবাদাকে এক দর্শনীয় ছক্কা হাঁকালেন। পরের বলে আবারও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে প্যাটারসনের তালুবন্দী হয়ে ফিরলেন ১৬ রানে। অপরাজিত ১১০ রান করে মাঠ ছাড়েন মুশফিক।