বগুড়ায় ভালো কলেজে ভর্তির প্রলোভন দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ ও পরে তাকেসহ তার মাকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করার বহুল আলোচিত ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলা তদন্ত শেষে বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক তুফান সরকারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। মামলা দায়েরের দুই মাস ১২ দিন পর তদন্ত শেষে মঙ্গলবার সন্ধায় আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ জানান, মঙ্গলবার মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে দুটি মামলারই পৃথক চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। দুটি মামলাতেই অভিযুক্ত হয়েছে তুফান সরকার। অভিযোগপত্রে ধর্ষণ ও মা-মেয়ে নির্যাতনের ঘটনায় ১৩ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে ।
মামলায় অভিযুক্ত তুফান সরকার ছাড়াও আরো ১২জন হলেন তুফান সরকারের স্ত্রী তাছমিন রহমান ওরফে আশা সরকার, বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি, লাভলি রহমান রুমি, মুন্না, আতিকুর রহমান আতিক, আলী আজম দিপু, এমারত আলম খান জিতু মিয়া, সামিউল হক শিমুল, মেহেদি হাসান রুপম, জামিনুর রহমান রুনু, নাপিত জীবন রবিদাস যতিন, আঞ্জুয়ারা বেগম। ধর্ষণ মামলায় উল্লেখিতদের মধ্যে জামিনুর রহমান রুনু, নাপিত জীবন রবিদাস যতিন, আঞ্জুয়ারা বেগমের সম্পৃক্ত পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
গত ১৭ জুলাই বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুরের বাসিন্দা ও বগুড়া শহর শ্রমিকলীগের তৎকালীন আহবায়ক তুফান সরকার ভালো কলেজে ভর্তি করে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে এক ছাত্রীকে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে ২৭ জুলাই বিচারের নাম করে তুফান সরকারের স্ত্রী আশা সরকার ও আশার বড় বোন, স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগ নেতা, বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ তার সহযোগিরা রুমকির বাড়িতে নিয়ে নির্যাতন করে। নির্যাতন করার একপর্যায়ে কিশোরী ও তার মাকে মারপিট ও মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এ ঘটনার পর তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই তুফান সরকার ও তার ৫ সহযোগিকে এবং পরে আশা, কাউন্সিলর রুমকিসহ মামলার সুত্র ধরে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করে। ধর্ষিতা কিশোরীর মা ২৯ জুলাই বগুড়া সদর থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে। মামলার বাদি ১০ জনের নাম ধরে মামলা দায়ের করলেও তদন্তে আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার ভিকটিম মা ও মেয়ে বর্তমানে নিরাপত্তার কারনে রাজশাহী ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে। এ ছাড়া তুফান সরকার গাজিপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে (পার্ট-২) আটক রয়েছে।