সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে আগে থেকে জানা সত্ত্বেও সঠিক ভূমিকা না রাখার অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের নিন্দা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানায় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান। রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়ার আগেই ওই বিশেষজ্ঞরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন। সেই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের নীতির সমালোচনা করা হয় বলে দাবি করেছে গার্ডিয়ান। সংবাদ সংস্থাটি বলছে, ওই প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো নিয়ে কাজ করার বদলে জাতিসংঘ তা ‘ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
ওই প্রতিবেদনটি নিয়ে সঠিক সময়ে কাজ করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করে টিআইবি বলেছে, এমন পদক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাসে ওই প্রতিবেদনটি পেয়েছিল জাতিসংঘ। কিন্তু তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর আচরণকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলে অভিহিত করা হয়েছিল। পরে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে রোহিঙ্গা সংকটের সূচনা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নিষ্ক্রিয় থাকার এ ঘটনায় আমরা জাতিসংঘের ব্যাখ্যা চাই। বিশেষ করে জাতিসংঘ যা করার কথা বলে, সেটিই করতে না পারার ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত। কেউই, এমনকি জাতিসংঘও জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। ওই প্রতিবেদনটি অবশ্যই প্রকাশ করা উচিত এবং এই ব্যর্থতার জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনটি কেন ‘ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, তার কারণ ব্যাখ্যা করার সাহস জাতিসংঘের থাকা উচিত।
মিয়ানমারের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনের সীমান্তে গত ২৫ আগস্ট একাধিক তল্লাশিচৌকিতে অস্ত্রধারীদের হামলায় দেশটির নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে। এরপর কয়েক হাজার রোহিঙ্গা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ওই সেনা অভিযানে বেশ কয়েকজন নিহত হয়। পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের অনেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তারা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়নের এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ বলে অভিহিত করেছে।