প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে সরকার গৃহবন্দী করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মৃত্যু ঘটিয়েছে। এখন এ-ও শোনা যাচ্ছে, প্রধান বিচারপতিকে নাকি বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ এ কথা বলেন। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট ‘নগ্ন দলীয়করণে বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আইনমন্ত্রী এস কে সিনহার যে চিঠি গণমাধ্যমে দেখিয়েছেন, সেটিকে ‘ভুয়া চিঠি’ বলে দাবি করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ছুটির যে আবেদনপত্রটিতে স্বাক্ষর করেছেন, তাতে পাঁচটি ভুল রয়েছে। এই ভুলে ভরা আবেদনপত্রে তাঁর মতো একজন দায়িত্বশীল লোক স্বাক্ষর করতে পারেন না। তা ছাড়া তিনি সচরাচর যে স্বাক্ষর করেন, তার সঙ্গে ওই চিঠির স্বাক্ষরে মিল নেই।’
মওদুদ বলেন, লজ্জা লাগে রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায় থেকে এ ধরনের ভুয়া ও জালিয়াতি তথ্য দিয়ে জনগণকে যখন বিভ্রান্ত করা হয়। মূলত প্রধান বিচারপতি ছুটি চাননি। এতে সম্মতও ছিলেন না তিনি।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আইনজীবীরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে বলা হচ্ছে তিনি অসুস্থ। তাঁর আত্মীয়স্বজনকেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর বাসার টেলিফোন লাইনটিও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়কে কেন্দ্র সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা যে ভাষায় কথা বলেছেন, তার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। এখন তাঁর অসুস্থতার কথা বলে তাঁর অসম্মতিতে এক মাসের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগে তিনি জাপান, কানাডা থেকে ঘুরে এসেছেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ছুটি নেননি। তাঁকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বাধ্য করা হয়েছে। বন্দুকের নল দিয়ে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। অথবা এখন তিনি কোন পরিবেশে রয়েছেন, তাঁকে কীভাবে রাখা হয়েছে, তা-ও আমরা জানি না।’
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, অধ্যাপক সদরুল আমিন, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।