পিএইচডির পর সিনেমা!

Slider বিচিত্র

84a1e7f7545c88ca0299b2d5b92bc5a5-59d614c175173

 

 

 

 

ক্যাম্পাসে এসেছে নতুন এক মেয়ে। শিক্ষকেরা জেনে গেলেন, সে গানবাজনাও করে। গ্র্যাজুয়েটদের নবীনবরণের অনুষ্ঠানে তাকে তুলে দেওয়া হলো মঞ্চে—‘গাও দেখি’। সুযোগ যখন মিলল, এক জোড়া গান গেয়ে ফেলল মেয়েটি। টালিগঞ্জের বাংলা ছবি গ্যাঙস্টার থেকে ‘তোমাকে চাই’, বলিউড ছবি ওয়েক আপ সিড থেকে ‘ইক তারা’। জোড়া গানের পর হিট বাংলাদেশের বুশরা শাহরিয়ার। স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে তিনি গেছেন দিল্লির উত্তরাখন্ডের রোরকি আইআইটিতে। অনেকটা সিনেমার মতো ঘটনা। এরপরই মনের ভেতর উসখুস করবে একটি প্রশ্ন, ‘প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছেন কয়টি?’ মুখ ফসকে বলে ফেললে বুশরা বলেন, ‘কাউকে বলবেন না তো? অনেকগুলো।’

শৈশবে নতুন কুঁড়িসহ ছোটদের বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল বুশরার। সেগুলো থেকে পাওয়া ক্রেস্ট শেলফে তুলে রেখে মন দিয়েছিলেন পড়ালেখায়। সাময়িক ছেদ, তবে গানের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি। মিউজিক কলেজের শিক্ষক সুব্রত সরকারের কাছে শেখাটা চালিয়ে নিয়েছিলেন। পরিবার থেকে ফার্স্ট-সেকেন্ড-থার্ড হওয়ার চাপ ছিল। সেসব সামলেছেন তিনি। এখন আর কোনো বাধা নেই। মেয়ে গান করলে মা-বাবার আপত্তি নেই, মা-বাবা বিয়ের জন্য পাত্র দেখলেও মেয়ের আপত্তি নেই। তবে পড়ালেখা ও গান চলছে-চলবে।
সম্প্রতি কলকাতার বন্ধুদের নিয়ে করা ‘গল্প হবি আয়’ গানের ভিডিও রিলিজ করেছেন বুশরা। ধানমন্ডির এক রেস্তোরাঁয় বসে সেটার শুটিংয়ের গল্প বলছিলেন কদিন আগে। ভারতের উত্তরাখন্ড প্রদেশটা ভালো লেগেছে তাঁর। মিউজিক ভিডিওর মধ্য দিয়ে যতটা পারা যায় তুলে এনেছেন। বলছিলেন, ‘…বিশেষ করে মুসৌরি, ঋষিকেশ তো অসাধারণ। দেরাদুনে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং হয়েছিল। সেখানে গিয়ে রীতিমতো রোমাঞ্চিত হয়েছি। আরেকটা মজা হচ্ছে, আমি গাওয়ার পর ক্যাম্পাসের ছেলেমেয়েরা ভুলভাল উচ্চারণে বাংলা গান গাইতে চেষ্টা করে। দেখা করতে আসে, ছবি তোলে। গান করি বলে শিক্ষকেরাও আমাকে আলাদা করতে পারেন। আমার বিভাগের শিক্ষকদের কথা হচ্ছে, তোমার মুম্বাই যাওয়া উচিত।’
জানতে চাই অনুপম রায় ও অরিন্দম চ্যাটার্জির কথা। ‘কলকাতার জনপ্রিয় এ দুই বাঙালি শিল্পীর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? মনে হলো তাঁদের সঙ্গে খুব ভাব জমিয়েছেন।’ মুচকি হেসে বুশরা বলেন, ‘অনুপমদার সঙ্গে কাঁধে হাত রেখে তোলা ছবিটা দেখে বলছেন তো? তাঁরা অতিমাত্রায় পেশাদার। কাজের সময় আন্তরিকতা তুঙ্গে। ভালোবেসে মাথায় তুলবেন। পরে আর চিনতে পারবেন না। ব্যাপারটা খারাপ লাগেনি।’ আর ‘বাংলাদেশ’ সিরিজের কী হবে? ‘বিজয়ের বাংলাদেশ’, ‘ভালোবাসার বাংলাদেশ’, ‘উৎসবের বাংলাদেশ’-এর পরে আসছে তাঁর ‘খেলাধুলার বাংলাদেশ’। ‘আগেরগুলোর মতোই আমার লেখা-সুর করা ও গাওয়া। এবারের মিউজিক ভিডিওর পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। বাংলাদেশে জনপ্রিয় ক্রিকেট, ফুটবল ও জাতীয় খেলা কাবাডিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। অন্য খেলাগুলোও থাকবে। এ বছরেই শুটিং।’
যাঁদের গান ভালো লাগে এমন কয়েকটি নাম বলতে বললে বুশরা বলেন হাবিব, তাহসান, হৃদয় খান ও কৃষ্ণকলির নাম। হালের মিনার ও ইমরানের গানের থেকে ভিডিওগুলো নাকি তাঁর বেশি ভালো লাগে। বুশরার কাছে রাখা হয়েছিল শেষ প্রশ্ন। গাওয়ার ছাড়াও মিউজিক ভিডিওর প্রতি এত ঝোঁক তাঁর। ঘটনা কী? বিশেষ কোনো ইচ্ছে? বুশরা বলেন, ‘একটা সিনেমা করার ইচ্ছে আছে। তবে পিএইচডি শেষ করার পর। তাতে অন্তত বলতে পারব, দেশের প্রথম পিএইচডি হোল্ডার নায়িকা, হা হা হা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *