পিরোজপুরে চার ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে অভিজিৎ রাহুল ব্যাপারী (২৭) নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ওই সব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলায় পুলিশ অভিজিৎকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের অভিজিৎ কয়েক বছর আগে পিরোজপুর শহরের বসন্তপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে কোচিং সেন্টার খোলেন। ওই কোচিং সেন্টারে তিনি বিভিন্ন সময় চার স্কুলছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তোলেন। পরে ওই আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের যৌন হয়রানি করেন। সম্প্রতি ফেসবুকে আপত্তিকর ছবিগুলো প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা গত সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় থানায় অভিজিতের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেন। রাতেই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
অভিজিৎ পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক। পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিজিতের এক বন্ধু বলেন, অভিজিৎ কোচিং করতে যাওয়া কিশোরীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে কৌশলে তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি মুঠোফোনে তুলে রাখতেন। ওই সব ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তাদের সঙ্গে যৌন হয়রানি ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পিরোজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সালমা রহমান বলেন, ‘আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি দাবি করছি, যারা চার স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দিয়েছে, তাদের খুঁজে আইনে আওতায় আনার জন্য।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিরোজপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাচনাইন পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, চার স্কুলছাত্রীর সঙ্গে অভিজিৎ রাহুলের আপত্তিকর ছবিগুলো কীভাবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ল বা কারা ছড়িয়ে দিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আর কারও জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।