প্রবাসে প্রায় তিন দশক আছেন আসমা ইকবাল। কাজ করেন আমেরিকার নামকরা এয়ারলাইনসে। গত ২ অক্টোবর সোমবার রাতের কর্মস্থলটি অনন্য হয়ে উঠল তাঁর কাছে।
ওয়াশিংটন ডিসির বিমানবন্দরে ভিভিআইপি যাত্রী সামাল দেওয়া আসমা ইকবালের কাছে নতুন কিছু নয়। পেশাগত কারণেই এসব সামাল দিতে অভ্যস্ত তিনি। সোমবার রাতে ওই ভিভিআইপি লাউঞ্জে এলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। এ সময় হঠাৎ তাঁর মনে পড়ে গেল বাবা তাহির আলী মার্চেন্টের কথা। যিনি একসময় সিলেটে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতিই করতেন। এরপরেও আবেগকে অন্তরে বন্দী করে পেশাদার কর্মীর মতো কাজ করে যাচ্ছিলেন আসমা ইকবাল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ খেয়াল করলেন। জিজ্ঞেস করলেন, বাঙালি কি না। আসমা ইকবালের উত্তর শুনেই শেখ হাসিনা যেন মমতাময়ী মায়ের মতো হয়ে উঠলেন। কাছে ডেকে বসালেন। বললেন, যখন দেখেন বাইরেও বাঙালি মেয়েরা অনেক এগিয়ে আছে, তখন অহংকার বোধ করেন।
পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছিলেন, তাঁর শারীরিক অসুবিধার কথা। পিত্তথলিতে অপারেশনের পর নিয়ন্ত্রিত খাবারের কথাও জানালেন। সকালে সুপ খেয়েছেন, বোন রেহানার বানিয়ে দেওয়া জাউ (নরম ভাতের খিচুড়ি) খেয়ে লন্ডনের পথে রওনা দিয়েছেন। আসমা সচরাচর যা করেন না, তাই করলেন। বিশেষ খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করার ব্যবস্থা নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
আসমা ইকবাল বললেন, সোমবার রাতের কাজটি তাঁর কাছে সত্যি অনন্য হয়ে উঠেছিল। অনেক দিন দেশের বাইরে আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পেয়ে, তাঁর সঙ্গে একান্তে কথা বলে তিনি সত্যিই আপ্লুত।
আসমা ইকবাল বললেন, বাবা আজ বেঁচে থাকলে, দেখে খুশি হতেন যে, বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে আপ্যায়িত করছে তাঁর পরবাসী মেয়ে। উল্লেখ্য, সিলেট শহরের চেনা আওয়ামী লীগ পরিবারের মেয়ে আসমা। তাঁর বাবা তাহির আলী আমৃত্যু আওয়ামী লীগ করেছেন।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ২ অক্টোবর সোমবার রাত ১০টায় ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিন লন্ডনে অবস্থানের পর ৭ অক্টোবর ঢাকায় ফিরবেন তিনি।