‘পুঁজিবাদী স্বার্থেই রোহিঙ্গাদের পাশে নেই রাশিয়া-চীন’

Slider বিচিত্র

efde629f80d866392a0ccb14529e4068-59d4a9d0b6894

 

 

 

 

পুঁজিবাদী স্বার্থের কারণেই রাশিয়া, চীন ও ভারত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ায়নি বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, একাত্তরের হানাদার, বাংলাদেশের ধর্ষক ও মিয়ানমারের সেনাসদস্য—সবাই একই আদর্শে দীক্ষিত।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।

অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, পুঁজিবাদের মালিকানা থাকে ৫ জনের হাতে, ৯৫ জন থাকে বঞ্চিত। বঞ্চিতরা দরিদ্র হয়। পুঁজিবাদ সবকিছুকেই বাজারে নিয়ে আসে। যাঁদের হাতে টাকা থাকে, তাঁদেরই বাজারে প্রবেশের অধিকার থাকে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘যে ঘটনা একাত্তরে আমরা দেখেছি, এখন তা দেখছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। চীন সবকিছুই জানে। কিন্তু চীনের পুঁজিবাদী সরকার নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ায়নি, দাঁড়িয়েছে মিয়ানমারের পক্ষে। রাশিয়াও চীনের মতোই আচরণ করছে। যে ভারত একাত্তরে আমাদের দেশের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে, সেও দাঁড়িয়েছে মিয়ানমারের পক্ষে। কারণ একই—পুঁজিবাদী স্বার্থ।’

এই শিক্ষাবিদ বলেন, একাত্তরের হানাদার, বাংলাদেশের ধর্ষক ও মিয়ানমারের সেনাসদস্য—সবাই একই আদর্শে দীক্ষিত। সেই আদর্শ হলো পুঁজিবাদ। অক্টোবর বিপ্লব এই পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল।

অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির আরেকজন আহ্বায়ক হলেন ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক। জাতীয় কমিটির সমন্বয়ক হিসেবে আছেন হায়দার আকবর খান রনো। সংবাদ সম্মেলনে শতবর্ষ উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা জানানো হয়। আগামী শুক্রবার বেলা তিনটায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে উদ্বোধনী সমাবেশ করা হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আগামী ৯ নভেম্বর সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল হবে।

এখনো সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়নি, মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সভ্যতার বিবর্তনে ক্ষমতা এক শ্রেণির হাত থেকে অন্য শ্রেণির হাতে গেছে। দাস মালিকদের হাত থেকে ক্ষমতা চলে গেছে সামন্তপ্রভুদের হাতে। আবার সামন্তবাদীদের হটিয়ে পুঁজিবাদ এসেছে। এই তিনটি ব্যবস্থার মিল—ব্যক্তিগত মালিকানা। তিনটির কোনোটিতেই সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ১৯১৭ সালের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব পুঁজিবাদের ক্রমবর্ধমান দুঃসহ দৌরাত্ম্যকে প্রতিহত করে একটি মানবিক বিশ্ব গড়ে তুলতে চেয়েছিল। অক্টোবর বিপ্লব দেখিয়েছে, মালিকানা যদি ব্যক্তিগত হতে থাকে তাহলে সব উদ্ভাবনা ও উন্নয়ন চলে যায় কতিপয় ব্যক্তির হাতে। পুঁজির মালিকেরা শোষণ ও লুণ্ঠনের কাজে জ্ঞান ও বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, জাতীয় গণফ্রন্টের আহ্বায়ক টিপু বিশ্বাস, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *