রাজধানীর মিরপুরে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা আহত মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। ডাক্তারি পরীক্ষায় এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের কারণে তার প্রজনন অঙ্গে ক্ষত হয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত করতে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। তারা বলছে, মেয়েটি ‘ঘটনাস্থল’ নিশ্চিত করলে তবেই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে। মেয়েটির মা টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন। কথা বললে ‘মেয়ের বিয়ে হবে না’—এ কারণে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না।
গত শুক্রবার রাতে মিরপুর ১০ নম্বরের শাহ আলী মার্কেট এলাকা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। তার প্রজনন অঙ্গ থেকে তখন রক্ত ঝরছিল। ১৬ বছরের এই কিশোরীর বাড়ি টাঙ্গাইলে। সে স্থানীয় একটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী।
আজ ওসিসিতে গেলে এর সমন্বয়ক বিলকিস বেগম বলেন, মেয়েটির ফরেনসিক সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। ফরেনসিকের ফল পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। মেয়েটির প্রজনন অঙ্গ ছিঁড়ে গিয়েছিল। সেখানে সেলাই লেগেছে।
বিলকিস বেগম বলেন, মেয়েটি জানিয়েছে, সজীব নামের এক ছেলের সঙ্গে তার মুঠোফোনে পরিচয় হয়েছিল। ছেলেটি তার বাড়ি দিনাজপুর বলে জানিয়েছিল। দুই মাসের পরিচয় ছিল তাদের। বিয়ে করার নিশ্চয়তা দিলে মেয়েটি তার বিয়ের জন্য মায়ের জমানো ৩০ হাজার টাকা এবং দুই আনা সোনা নিয়ে পালিয়ে আসে। ছেলেটি টাকা এবং সোনা নিয়ে পালিয়ে গেলে শাকিল নামে আরেক ছেলে তাকে একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
বিলকিস বেগম বলেন, মেয়েটি অনেক কিছুই এখনো ঠিকঠাক বলতে পারছে না। কথার মধ্যে বেশ কিছু অসংলগ্নতাও আছে। যে হোটেলে নিয়ে গিয়েছিল, সেই হোটেলের নামও বলতে পারছে না। যে ছেলেটি তাকে নিয়ে এসেছিল, সেই ছেলেটিরও বিস্তারিত বলতে পারছে না। তিনি বলেন, মেয়েটি সুস্থ হওয়ার পর তাকে কাউন্সেলিং করলে পুরো বিষয়টি জানা ও বোঝা যাবে। সে জন্য কয়েক দিন সময় লাগবে।
ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করার বিষয়ে বিলকিস বেগম বলেন, মেয়েটির অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। এর সঙ্গে অনেক কিছুই চলে গেছে। শরীরে লেগে থাকা রক্ত সংগ্রহ করবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু মা এসে তা-ও ধুয়ে ফেলেছেন।
একটি দোকানের বেঞ্চের নিচে পড়ে থাকা মেয়েটিকে উদ্ধার করার পর শুক্রবার প্রথমে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা না দিলে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান উদ্ধারকারীরা। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পরে তাকে ওসিসিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মেয়েটি সুস্থ হয়ে ঘটনাস্থল নিশ্চিত করে বললে তবেই মামলা করা হবে।