রোহিঙ্গা ইস্যুতে ক্ষুব্ধ বিশ্বনেতারা। এরই মধ্যে এ সঙ্কটের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করে সহিংসতা বন্ধের জন্য নেত্রী অং সান সুচির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন তারা। কিন্তু সেনাবাহিনী ও সুচি উল্টো সহিংসতার দায় চাপাচ্ছেন রোহিঙ্গাদের ওপর। এমনই এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সময় আজ রাত একটায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে উন্মুক্ত বিতর্কে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এর আগে তিন দফা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে পরিষদ। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাঁ রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতাকে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বৃটিশ সরকার মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের কথা বলেছে। তারা সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দেয়া প্রশিক্ষণ স্থগিত করেছে বৃটেন। অং সান সুচির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার দাবি উঠেছে। চার লাখেরও বেশি মানুষ অনলাইনে এমন আবেদনে স্বাক্ষর করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আহ্বান জানানো হয়েছে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিতে। ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারাবিশ্বে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। আজ উন্মুক্ত বিতর্ক হবে এ ইস্যুতে। তাতে বক্তব্য রাখবেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাঁ। তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিস্তারিত বর্ণনা করবেন। জাতিসংঘে বৃটিশ উপ রাষ্ট্রদূত জোনাথন অ্যালেন বলেছেন, সহিংসতা যাতে বন্ধ হয় সেজন্য মিয়ানমারকে পরিস্কার বার্তা দিতে হবে। রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা অনুমোদন করতে হবে। রোহিঙ্গাদের মর্যাদা নির্ধারণ করতে হবে। ওদিকে ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রাঁসোয়া দেলাত্রি বলেছেন, মিয়ানমারের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করতে নিরাপত্তা পরিষদকে কঠোর ও ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ মাসের শুরুর দিকে এই সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিল নিরাপত্তা পরিষদ। তাতে সমর্থন দিয়েছিল চীন। দেশটি মিয়ানমারের সাবেক সামরিক জান্তাদের মিত্র বলে পরিচিত। এমন কি এখনও নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদেরকেই ‘বিগ ব্রাদার’ মানছে মিয়ানমার। নিরাপত্তা পরিষদের ওই আহ্বান ও তাতে চীনের সমর্থনের পরও রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগ অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ঘটাচ্ছে মিয়ানমার এমন অভিযোগ করছে শীর্ষ স্থানীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো। তারা জরুরি ভিত্তিতে এ জন্য পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জাতিসংঘে নিয়োজিত পরিচালক লোউ চারবোনেউ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যারা অপরাধ সংঘটিত করছে তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দিতে হবে।