বাংলাদেশ সরকার সম্মত থাকলে বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের সংকট দূরীকরণে সব ধরনের মানবিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি এ সংকটময় অবস্থার স্থায়ী সমাধান অনুসন্ধানের ব্যাপারেও বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে সার্বিক সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের জন্য নিযুক্ত সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সংস্থার ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের অপারেশন ম্যানেজার রাজশ্রী পারালকার, জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহিরন এ মাহ্বুব।
কী ধরনের আর্থিক সুবিধা বাংলাদেশ পেতে পারে, এ প্রশ্নের জবাবে চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশে এখন যে শরণার্থী সমস্যা চলছে, তাতে বিশ্বব্যাংক সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি আইডিএ-১৮তে ‘রিফিউজি ফান্ড’ নামে নতুন একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিলের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার। যেকোনো দেশ প্রয়োজনে তিন বছরে সর্বোচ্চ ৪০ কোটি ডলার ঋণ পেতে পারে। বাংলাদেশও এ তহবিল পাওয়ার যোগ্য। পুরো অর্থই অনুদান হিসেবে পেতে পারে বাংলাদেশ।
তবে অনুদান হিসেবে অর্থ দেয়ার আগে বিশ্বব্যাংক দেখবে সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য কী কী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক যথেষ্ট সচেতন। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গেও আলোচনা করেছি। এখন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনার আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
চিমিয়াও ফান বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সৃষ্ট সহিংসতার কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশায় বিশ্বব্যাংক ভীষণ উদ্বিগ্ন। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীর কাছে এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী বা উদ্বাস্তু বিষয়ে একটি নীতিগত কাঠামো থাকা প্রয়োজন।
শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে চাপ প্রয়োগে বিশ্বব্যাংক কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে ফান বলেন, শরণার্থীদের মানবিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন এবং বাসস্থানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। মানবিক সহযোগিতার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক পরিকল্পনা করছে।