ইরাকের কুর্দিদের স্বাধীনতাকে ‘স্বপ্ন’ আখ্যায়িত করে তা ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। কুর্দিস্তান অঞ্চলের স্বাধীনতার প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটের জবাবে তার দেশ যে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করছে তাতে কুর্দিদের অনাহারে দিনযাপন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বিরোধিতা সত্ত্বেও গণভোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানিকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন এরদোগান। গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার একদিন পর গতকাল আঙ্কারায় এক ভাষণে এসব কথা বলেছেন এরদোগান।ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দিস্তান অঞ্চলের স্বাধীনতার প্রশ্নে সোমবার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ইরাক, ইরান, সিরিয়া ও তুরস্কের বিরোধিতা এবং আপত্তি সত্ত্বেও এ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। কুর্দিস্তান অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত উত্তরাঞ্চলীয় তিনটি প্রদেশ এবং বিতর্কিত এলাকাগুলোতে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। অঞ্চলটির অধিবাসী হিসেবে নিবন্ধিত ৫২ লাখ কুর্দি ও অ-কুর্দিদের মধ্যে প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ ভোটদান করেছেন বলে স্থানীয় বার্তা সংস্থা রুদাও জানিয়েছে। অধিকাংশ ভোটারই ‘হ্যাঁ’ শিবিরের পক্ষে ভোট দিয়েছেন স্থানীয় খবরে দাবি করা হয়েছে। ভোটগ্রহণের পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার কথা রয়েছে। গতকালও ভোট গণনা হয়েছে। গতকাল দিন শেষে প্রাথমিক ফলাফল আশা করা হচ্ছে। আর আজ গণভোটের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার কথা রয়েছে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ শিবির জয়লাভ করবে বলে ইতিমধ্যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইরাকি কুর্দি নেতারা। তবে ভোটের ফলাফল আইনিভাবে মানতে বাধ্য নয় ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকার।
ভাষণে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘আমি একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশায় ছিলাম যে, আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট বারজানি গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত ত্যাগ করবেন। কারও সঙ্গে আলোচনা না করে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত স্রেফ বিশ্বাসঘাতকতা। ’ বারজানি ও কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার এই ভুল থেকে শিগগিরই সরে না গেলে অঞ্চলটিকে জাতিগত ও গোষ্ঠীগত যুদ্ধে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইতিহাসে তাদের নাম লজ্জার সঙ্গে লেখা হবে বলেও মন্তব্য করেছেন এরদোগান। ভোটের আগেই কুর্দি সরকারের উদ্দেশ্যে এরদোগান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, কুর্দিস্তানের তেল রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ একটি পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করে দেবে তার দেশ। বিবিসি।