ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আনুমানিক চার লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গার অবস্থা আরো শোচনীয় হতে পারে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়ান অ্যাডওয়ার্ড জেনেভায় ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ সকালে ইউএনএইসিআর বাংলাদেশে চতুর্থ দফা ত্রাণবাহী বিমান পাঠিয়েছে। ১০০টন ত্রাণ সামগ্রীসহ ইউএনএইচসিআরের ভাড়া করা বোয়িং ৭৭৭ মালবাহী বিমানটি এরই মধ্যে ঢাকা পৌঁছেছে। আরো দুটি ত্রাণবাহী বিমানের বাংলাদেশে যাওয়ার কথা রয়েছে।’
তিনি বলেন, সেখানে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানোর পরও নিরাপত্তার আশায় সেখানে ছুটে আসা বিপুল জন স্রোতের চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণের স্বল্পতা বেড়েই যাচ্ছে। এই শরণার্থীদের পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল নয়।
এডওয়ার্ড বলেন, ‘সম্প্রতি যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের অনেকেই গভীর মানসিক আঘাত পেয়েছেন। বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া সত্ত্বেও তাদের কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনএইচসিআর ও আমাদের অন্যান্য সহযোগীরা কুতুপালং ও নয়াপাড়া আশ্রয় শিবিরে অবস্থানরত নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী পাঠিয়েছে। এছাড়াও এই শিবিরগুলোর আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্যও এই মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করেছে। ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের মাঝে জরুরি অস্থায়ী বাসস্থান নির্মাণকারী কিটস, রান্না করার জিনিসপত্র, পানির পাত্র, স্লিপিং ম্যাটস, সোলার ল্যাম্প ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরণ করছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, তারা বাবা-মা হারানো নিঃসঙ্গ শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের মতো মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা শরণার্থীদের শনাক্ত ও সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছে। এদের অবিলম্বে জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়, খাবার, পানি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন।
সংস্থাটির মুখপাত্র আরো বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমরা ও আমাদের সহযোগিরা প্রায় এক হাজার ৯০০ নারীর মাঝে হাইজিন কিটস বিতরণ করেছি।প্রতিদিন আমরা গড়ে নয় হাজার ৯০০ জনের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করছি। এছাড়াও দুই হাজার ৬০০ জনকে অন্যান্য রান্না করা খাবার ও চার হাজার ৭০০ জনকে পুষ্টিকর বিস্কুট দেয়া হচ্ছে।’ কুতুপালং ও নয়াপাড়ার শিবিরগুলোতে দ্বিগুণ সংখ্যক লোক আশ্রয় নিয়েছে, তাই সেখানে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে, ইউএনএইচসিআর সেখানে আরো সাতটি গভীর নলকূপ, ১৩টি অগভীর নলকূপ ও ১১৬টি ল্যাট্রিন তৈরি করে দিয়েছে।
গত সপ্তাহান্তে বাংলাদেশ সফরকালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এই সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।