সরকারি বক্তব্যের বিরোধিতা করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা ফের সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হলো। সর্বোচ্চ আদালতকে তারা জানাল, সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম তো দূরের কথা, দেশের কোথাও কোনো রকম অসামাজিক কাজের সঙ্গে রোহিঙ্গারা যুক্ত নয়।
গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এক অতিরিক্ত হলফনামায় এই দাবি জানান দুই রোহিঙ্গা শরণার্থী মোহম্মদ সলিমুল্লাহ ও মোহম্মদ শাকির। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করে এই দুজন আগেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় সরকার গত সোমবার জানায়, রোহিঙ্গারা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে মারাত্মক বিপজ্জনক। তাদের সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, সন্ত্রাসী সংগঠন জয়শ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তাইয়েবার যোগসাজশ রয়েছে। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের ফেরত পাঠানো হবে। এই যুক্তির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও বলেছেন, রোহিঙ্গারা কেউ শরণার্থী নয়। তাঁরা সবাই অনুপ্রবেশকারী। বেআইনিভাবে তারা ভারতে চলে এসেছে। তাই তাদের ফেরত যেতেই হবে।
দুই রোহিঙ্গা শরণার্থী এই সরকারি অভিমতেরই বিরোধিতা করেছেন। অতিরিক্ত হলফনামা দাখিল করে তাঁরা যা বলেছেন, তার সমর্থনে তাঁরা সরকারের এক রিপোর্টকেই হাতিয়ার করেছেন।
মহম্মদ সালিমুল্লাহ ও মহম্মদ শাকির অতিরিক্ত হলফনামায় বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক আখ্যা দেওয়া হলেও সরকার তার সমর্থনে একটিও প্রমাণ দেখায়নি। তাঁরা বলেন, এই বছর জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গাদের কেউ জঙ্গিবাদ বা ওই ধরনের কোনো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত, সরকারের কাছে তেমন কোনো প্রমাণ নেই। বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসার অপরাধে মোট ৩৮ জন রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আবেদনে তাঁরা বলেছেন, সব রোহিঙ্গার সঙ্গে সন্ত্রাসী যোগসাজশ রয়েছে, এমন দাবি সরকার করতে পারে না। কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু প্রাণ বাঁচাতে ২০১১-১২ থেকে চলে আসা সব রোহিঙ্গাকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়ে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা অন্যায়।