দহন কাল
– সাদিয়া তাহমিন মিশু
সময়ের ভগ্নাংশ মেনে সমস্ত প্রহর
বুকের মধ্যরেখায়, হৃদপিণ্ডের ভেতর
কেবলই জেগে থাকে এখন-
তেপান্তরের খটখটে শুকনো মাঠ,
পাতাহীন তরু- নিদারুণ কঙ্কালসার!
দৃষ্টির সীমান্ত জুড়ে ধ্যানী ঋষি-
মেঘাহত জোছনার গাঢ় বিষন্ন ব্যথা,
ঘোর অমানিশার সাগর বিরহ,
সেই চিবুকের ঢাল, কালো তিল,
কুয়াশা রাতের স্বৈরাচার অন্ধকার!
নিঃশ্বাসের বাতাসে ঝরে পড়ে-
অকাল প্রয়াত ফুলেদের দীর্ঘশ্বাস,
বৃন্তচ্যূত পাতার অনুচ্চার আর্তনাদ,
আহত জোনাকির সুদীর্ঘ যন্ত্রণা
ঝরা পালকের নিঃশব্দ ব্যথাভার!
ভাবনার বিস্তৃত শাখায় শাখায়
বাদুরের মতো ঝুলে থাকে
রোদ পোড়া এক ঝলসানো অপরাহ্ন,
কক্ষচ্যুত নক্ষত্রের বিষন্ন চোখ,
পাখাহীন উইয়ের নৈমিত্তিক হাহাকার!
কল্পনার অবারিত তটরেখায়-
উদাসীন পায়ে হেঁটে বেড়ায়
হারানো প্রেমের আরক্তিম আভা,
শেষ দেখা ছায়ার এক অশরীরী মূর্তি,
আর নিষিদ্ধ বাসরের উন্মাদ অভিসার!
নিশুতি রাতের আনমনা ঘুমে
অনুভবে পাটাতনে জেগে ওঠে হঠাৎ
সেই ঐশ্বর্যময় উরু, রসালো ঠোঁট,
অমৃতভাণ্ড বুক, মায়াময় চোখ
তারপর,সেই তীব্র দহন- হৃদয় ছারখার!
সময়ের ভগ্নাংশ মেনে সমস্ত প্রহর
অনুভবের অক্ষাংশ- দ্রাঘিমায় আজ
কেবল জেগে আছে জ্যামিতিক একাকীত্ব
অদূরে হাঁটে অনাগত অকাল শ্রাবণ-
ব্যাকরণ বিধিহীন এলোমেলো অন্ধকার!