এম এ কাহার বকুল: লালমনিরহাট প্রতিনিধি; লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার হাজরাণিয়া দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী ও শিক্ষিকা সুমিত্রা রানীর অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।
রোবাবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দু’পাশে দাড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজে সহস্রাধিক শিক্ষাথী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী এ মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় লম্পট ও দুশ্চরিত্র প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী ও সহকারী শিক্ষিকা সুমিত্রা রানীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
অভিভাবকরা জানান, এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুমিত্রা রানীর সাথে দীর্ঘ দিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানীর। বেশ কিছু দিন বিদ্যালয়ের বাথ রুমে ঐ দুই শিক্ষককে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। শুধু তাই নয় একাধিক ছাত্রী প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বনীর হাতে ইফটিজিং এর শিকার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা দাবী করে মানববন্ধনে বলেন, প্রধান শিক্ষক একের পর এক এ ধরনের অনৈতিক কাজ করে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছেন। তারা আরো বলেন, গত ১৮ জুলাই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা সুমিত্রা রানীর বাড়িতে আপত্তিকর অবস্থায় দু’জনকে ধরে ফেলেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক ৫ সদস্য তদন্ত কমিটি করে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ। তবে, এ যাবৎ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়নি বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মোঃ জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ উপস্থিতে প্রাথমিক ভাবে তদন্তে সন্দেহাতীত ভাবে সত্য প্রমানিত হওয়ায় অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্থ করা করা হয়েছিল। পরে ঘটনাটি সুষ্ঠ তদন্তে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ‘অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকাকে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হওয়ার নোটিশ দেয়া সত্বেও তারা নিদ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাজির হয়নি বা কোন প্রকার যোগাযোগ করেননি।
এদিকে প্রধান শিক্ষক স্থানীয় প্রভাবশালীদের প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিাতিতে এলাকাবাসি ও শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন।
উল্যেখ্য, গত ১৮ জুলাই ঐ দুই শিক্ষককে অনৈতিক কাজের সময় হাতে নাতে ধরে ফেলে গনধোলাই দেন স্থানীয়রা। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়নি প্রধান শিক্ষক। বুধবার প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা একটি কক্ষে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় উপস্থিত জনতা ওই দুই শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। উপস্থিত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাছে বিস্তারিত শুনে তাৎক্ষনিক অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী ও সহকারী শিক্ষিকা সুমিত্রা রানীকে এ ঘটনায় সাময়িক ভাবে বরখাস্থ করা হয়।