ঢাকা: চব্বিশ ঘন্টায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে প্রায় ২০০০০ রোহিঙ্গা। আর এক সপ্তাহে তাদের সংখ্যা ৬০০০০। এ অবস্থায় মিয়ানমারের রাখাইনের মানবিক সঙ্কট বাংলাদেশকে আঘাত করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাঁ রাখাইনে সংঘাতে লিপ্ত সব পক্ষকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। বলেছেন, বিরত না থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটে রূপ নিতে পারে।
ত্রাণ বিষয়ক এজেন্সিগুলো ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের রিসোর্স বা ত্রাণ সামগ্রীর মজুদের ওপর চাপ পড়েছে। তা সত্ত্বেও তাদের সহায়তা করে যাচ্ছে এসব সংস্থা। শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) শনিবার বলেছে, গত ২৪ ঘন্টায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র ভিভিয়ান তান বলেছেন এ কথা বলেছেন। গ্রামের পর গ্রাম ও গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিরা একে অন্যকে দায়ী করছে। আক্রান্ত এলাকায় নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশে অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি শনিবার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়, নিরাপদ পানি ও খাদ্য প্রয়োজন। এ ছাড়া তাদের আশ্রয়ের জন্য তাঁবু সংকট দেখা দিয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হওয়ায়। এত বেশি রোহিঙ্গা আসছে যে, নতুন কে, পুরনো কে, তা সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখনও দুই দেশের মধ্যবর্তী নো ম্যানস ল্যান্ডে আটকরা পড়ে আছে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ। ত্রাণকর্মীরা বলছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে আরো রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে পারে। নতুন আগত রোহিঙ্গাদের জন্য উচ্চ শক্তিযুক্ত বিস্কুটের মজুদে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চালের তহবিলে সঙ্কট দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ১৬ হাজারই স্কুল-বয়সী শিশু। ৫ হাজারের বেশির বয়স ৫ বছরের নিচে। তাদের জরুরি টীকার প্রয়োজন। নিঃসঙ্গ ও আলাদা থাকা শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের অনেকেই মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত ও ক্ষুধার্ত। তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে শুকনো খাদ্য ও মানসিক-সামাজিক সমর্থন। বর্তমান ব্যবস্থায় মাত্র ৫০০০ শিশুর শিক্ষা দেয়ার মতো সক্ষমতা আছে। বাড়তি শিশুদের জন্য আরো ৫০০ স্কুল বা শিক্ষা কেন্দ্র প্রয়োজন। নিয়ম লঙ্ঘন প্রতিরোধে শিশু শ্রম, যৌন ও লিঙ্গগত সহিংসতা, মানব পাচারের বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।