বাণীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের সবার জন্য আনন্দ ও প্রেরণার। ১৯৭৮ সালের এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাকশালী একদলীয় দুঃশাসনের জের ধরে সেসময়ে দেশে বিরাজমান চরম জাতীয় সংকটের কারণে যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা পূরণ করতে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপি বিগত ৩৯ বছরে বার বার সকলের অংশগ্রহণমূলক জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে এবং দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যানে কাজ করে গেছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের এই প্রিয় দল অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি ৯ বছরের স্বৈরাচারবিরোধী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রাজপথে আপসহীন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিএনপির বলিষ্ঠ ভূমিকা জনগণ কর্তৃক সমাদৃত হয়েছে। এই কারণেই বিএনপি দেশবাসীর কাছে এখন সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুন্ন রেখে দেশ ও জনগণের সেবায় বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ। বিএনপি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। বাংলাদেশের নিজস্ব স্বকীয়তা, স্বাধীনতা রক্ষায় বিএনপি তার ভূমিকা পালন করে চলেছে।’
বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘আজ দেশে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দেশব্যাপী পথে-ঘাটে শুধু লাশের মিছিল। বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি নিয়ে হাহাকার চারদিকে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশজুড়ে গণহত্যা, গুম, গুপ্তহত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর পৈশাচিকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মহোৎসব চলছে। ঈদুল আজহার প্রাক্কালে একের পর এক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গুম হওয়ায় চারদিকে ভয় ও আতঙ্ক পরিব্যাপ্ত হয়েছে। দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজমান।
জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এবারে আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য হারানো ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং বাক-ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ জনগণের মানবিক মর্যাদা সুরক্ষা করা।”