ক্রস ফায়ার বা আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে বা নির্যাতনে আসামীর মৃত্যু এখন অহ:রহ। পাশাপাশি গুমের ঘটনাও বাড়ছে। এই অবস্থায় ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ছাত্রলীগ নেতা মৃত্যুর একটি মামলায় আদালত বিএনপি নেতাদের খালাস দিয়ে তৎকালিন ওসিকে ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে। এর ফলে উদাহরণ সৃষ্টি হয়ে গেল যে, পুলিশি অপরাধের দায় ক্ষমতাসীন দলের নয় এটা শুধুই পুলিশের। রায়ে এটাই প্রমানিত হল।
সুতরাং অতি উৎসাহী কিছু পুলিশের অপকর্মের দায়ভার পুলিশেরই নিতে হবে সরকারী দল নিবে না বা তাদের উপরও বর্তাবে না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই রায় পুলিশের জন্য লাল সংকেত বলা যায়।
খবরে বলা হয়েছে, আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ছাত্রলীগ নেতা মৃত্যুর ঘটনায় তৎকালিন ওসির ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে সুনামগঞ্জ আদালত। একটু আগে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রণয় কুমার দাস এ রায় দেন।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা ওহিদুজ্জামান শিপলু হত্যা মামলায় তাহিরপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিনকে ১০ বছরের সশ্রম করাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রণয় কুমার দাস এ রায় দেন। একইসঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুলসহ বাকি ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। এ রায় ঘোষণার পর আদালত আঙিনায় থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুলের কয়েক হাজার সমর্থক উচ্ছাস প্রকাশ করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ২০ মার্চ রাত সাড়ে ৩টায় তাহিরপুর উপজেলার ভাটিতাহিরপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে আসামি ধরতে গেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তাহিরপুর জয়নাল আবেদনী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ওহিদুজ্জামান শিপলু। ঘটনার তিনদিন পর তার মা আমিরুন নেছা বাদী হয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও চার বিনএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ তাহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। খালাস পাওয়া বাকি আসামিরা হলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুনাব আলী, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল হাসান উজ্জ্বল, তাহিরপুর থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক রফিক এবং বিএনপি কর্মী শাহীন ও শাহজাহান।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন জানান, মামলার রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তারা।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম