এছাড়া কয়েকদশক ধরে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বৈধ-অবৈধভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অন্তত পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা। ইস্যুটি এখন আর মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় নেই। সেখানে রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন নির্যাতনের ভার প্রকারান্তরে বাংলাদেশের কাঁধেই বর্তাচ্ছে।সূত্র মতে, পালিয়ে আসা কয়েক হাজার রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারের উখিয়ায় নাফ নদীর তীরে অবস্থান করছে বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায়। নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক সীমান্তে জড়ো হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মিয়ানমারের দূতকে অবহিত করেন সচিব।
দিন দশেক আগে মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সেনা মোতায়েন করলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে মংডু ও বুথিদাউং এলাকায় পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলা করে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। এবারের হামলার পর এখন পর্যন্ত কতজন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা না গেলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আগে থেকে বসবাসরতরা বলছেন, অন্তত ১ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নতুন করে অনুপ্রবেশ করেছে।
পালিয়ে আসাদের মধ্যে ছিল বেশিরভাগ নারী-শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। এরই মাঝে আসছিল গুলিবিদ্ধরাও। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রামে ঢুকে রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করছে। এতে মাত্র একটি গ্রামেই শতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে মারা গেছেন।
এদিকে মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিপির চৌকি বাড়ানো ও সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও সেখানকার পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হয়ে ওঠেছে। ওপারের গ্রামগুলো প্রায় মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এপারের বেড়িবাঁধের পাশপাশি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার নারী–পুরুষ। সেনা অভিযান অব্যাহত থাকলে আগামী দিনগুলোতে রোহিঙ্গা ঢল আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা সংশ্লিষ্টদের।