নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি কমে গিয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও যমুনা নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে এই নদীর পানি বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে নওগাঁ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। নওগাঁ সদরের ইকরতারা নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর বাঁধ ভেঙে সদর উপজেলার তিলকপুর, বোয়ালিয়া ইউনিয়ন, নওগাঁ পৌসভার পার-নওগাঁ, সুলতানপুর এলাকা, পার্শ্ববর্তী বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম, সান্তাহার এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণকক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নওগাঁ জেলার মোট ১০টি উপজেলায় ৬৬টি ইউনিয়নের ৫১৬টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। জেলার ৩ লাখ ৬২ হাজার ৯৫ জন মানুষ পানিবন্দী হয়ে জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত জেলার ৪১টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জেলায় মোট ৬৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। জেলায় প্রায় ৮১ হাজার বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণভাবে এবং ২৬ হাজার বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সৃষ্ট বন্যায় মোট ১২ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. মো. আমিনুর রহমান জানিয়েছেন, জেলায় বন্যার্তদের ত্রাণ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৩৪৭ মেট্রিক টন চাল এবং ১৫ লক্ষ ২২ হাজার নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আত্রাই উপজেলায় ২৭ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ধামইরটহাট উপজেলায় ৪৬ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা, মান্দা উপজেলায় ৭১ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, নওগাঁ সদর উপজেলায় ২৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রানীনগর উপজেলায় ২৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২ লাখ ১২ হাজার টাকা, সাপাহার উপজেলায় ২৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, মহাদেবপুর উপজেলায় ৩০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ৬৫ হাজার টাকা, পত্মীতলা উপজেলায় ৬৫ মেট্রিক টন চালও নগদ ২ লাখ টাকা, বদলগাছি উপজেলায় ২৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং পোরশা উপজেলায় ৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা।