২০০৬ সালের অভিজ্ঞতা বলে ঠাকুর ঘরে উঁকি দিতে নাই। আমাদের ভুলে যাওয়ার কথা নয় যে, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নিজেরা ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে ক্ষমতা হারিয়েছিল। তৎকালীন সরকারি দল ও বিরোধী দল গনতন্ত্রের জন্য চিৎকার করে গনতন্ত্রকে হাত ছাড়া করেছিল। দুটি বছরের জন্য দেশ চলে গিয়েছিল অগনতান্ত্রিক সরকারের কবলে। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলি আমাদেরকে আবার ভয় দেখাচ্ছে। আমরা যেন আবার তেমন কোন পরিস্থিতে নিপতিত না হই তার জন্য জাতি চিন্তিত।
ইতিহাস বলে, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদকে হটিয়ে আমরা গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। কিন্তু আমাদের পরিণত গনতন্ত্রে এরশাদ সাহেবও ক্ষমতার ভাগ বসিয়েছেন। জামায়াতে ইসলামী মহান মুক্তিযুদ্ধের শত্রু। তাদের সঙ্গে বড় দুই দলই ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারা করেছেন। আমাদের রাজনীতি, গনতন্ত্রের জন্য চিৎকার করলেও আবার গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গনতন্ত্রকে রিমান্ডে ঠেলে দেয়। তাই মাঝে মাঝে আমরা অগনতান্ত্রিক সরকারের অধীনে চলে যেতে বাধ্য হই।
ষোড়শ সংশোধনী প্রণয়ন ও বাতিল উভয় ক্ষেত্রে চাপা ক্ষোভ ছিল। তবে বাতিল রায়ে যে সকল অবজারবেশন দেয়া হয়েছে তার মধ্যে কিছু কিছু বিষয় না আসলেও চলত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম না লিখলেও অবজারবেশনে তাকে খাটো করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার রায়ে বঙ্গবন্ধুকে ক্ষতিগ্রস্থ না করেলেও কোন ক্ষতি হত না। সব মিলিয়ে রায়ের অবজারবেশন ও রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা আমাদের জন্য লজ্জা জনক। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক নেতাদের অসাংবিধানিক বক্তব্য বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের মত একটি নিরপেক্ষ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে।
যতই দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি ঘোলা হচ্ছে। আমাদের নেতারা রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে নিজেরাই অপরাধ করে ফেলছেন। প্রতিবাদের ভাষা এমনো হচ্ছে যে, পরিস্থিতির অবনতি করতে উস্কানীই দেয়া হয়ে যাচ্ছে। তাই এখনি সময় লাগাম টেনে ধরার। না হয় ঠাকুর ঘরে উঁকি মারার ফল শুভ হবে না। কারণ ঠাঁকুর ঘরে কে থাকে বা কি করেন তা আমরা সকলেই জানি। তাই প্লিজ ঠাকুর ঘরে উঁকি মারবেন না। এতে বিপদ আসে।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম