টানা ভারি বর্ষণের ফলে নেপালে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। বেড়েছে ভূমিধস।
আর গত চার দিনে বন্যায় অন্তত ৭০ জন মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অন্যদিকে সোমবার নেপালের সরকারি কর্মকর্তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, পানিতে তলিয়ে যাওয়া একটি সাফারি পার্কে আটকা পড়া কয়েক শত বিদেশি পর্যটককে হাতির সাহায্যে উদ্ধার করা হয়েছ।
জানা গেছে, রাজধানী কাঠমান্ডুর ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সাউরাহা এলাকায় রাপতি নদীর পানি দুকূল ছাপিয়ে আশপাশের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্ট প্লাবিত হয়ে গেছে। সেখানে প্রায় ছয়শ’ পর্যটক আটকা পড়েছেন।
সাউরাহার তীরে চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক অবস্থিত। ৬০৫টি বড় ধরনের এক শিংয়ের গণ্ডার ও ভারতীয় গণ্ডারের এ নিবাসটি ভারতীয় ও চীনাসহ বিদেশি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এর জনপ্রিয়তার মূল আকর্ষণ হলো হাতিতে চড়ে গণ্ডার দেখা।
সাউরাহার হোটেল মালিকদের একটি গ্রুপের প্রধান সুমন ঘিমির সোমবার টেলিফোনে জানান, পার্কটিতে আটকা পড়া অতিথিদের মধ্যে রবিবার প্রায় তিনশ’ জনকে হাতি ও ট্রাক্টরে করে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী এলাকা ভারতপুরে নেয়া হয়েছে। বাকিদের সোমবার উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্ব বন্যপ্রাণী রক্ষা তহবিল ডব্লিউডব্লিউএফের নেপাল চ্যাপ্টারের প্রধান শিবা রাজ জানিয়েছেন, বন্যার কারণে ইতোমধ্যে একটি গণ্ডার মারা গেছে।
ত্রাণকর্মীরা বলছেন, হিমালয় কন্যা নেপালের পাহাড়ি এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে ভারি বর্ষণ হওয়ায় দেশটির ৭৫টি জেলার মধ্যে ২৬টিই বন্যায় প্লাবিত বা ভূমিধসের শিকার হয়েছে।
এর ফলে রোববার পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও ৫০ জন নিখোঁজ থাকার খবরে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশংকা করা হচ্ছিল বলে জানান নেপালের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী মোহন বাহাদুর বাসনেত।
তিনি জানান, ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন দক্ষিণাঞ্চলীয় নিচু এলাকায় বন্যার পানিতে ৬০ হাজারেরও বেশি ঘর তলিয়ে গেছে। দুর্গতদের কাছে এখন পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছতে না পারায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। হাজার হাজার মানুষ দুর্গত হয়ে পড়ায় পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসনেত।