ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড শহরে। দেখতে ঠিক একটি সেমি-অটোমেটিক হ্যান্ডগানের মতো, কিন্তু আসলে সেটি এয়ারসফ্ট গোত্রীয় একটি নকল পিস্তল। পুলিশ অফিসাররা সেটা না জেনেই গুলি চালান। তামির রাইস দৃশ্যত একটি ছোটদের খেলার জায়গায় খেলতে গিয়েছিল তার খেলনার অস্ত্রটি নিয়ে। বার বার সেটা হাতে নিয়ে লোকজনকে ভয়ও দেখাচ্ছিল। উপস্থিত জনতার মধ্যে কেউ একজন পুলিশকে ফোন করে সে’কথা জানান, এমনকি এ-ও বলেন যে, পিস্তলটা সম্ভবত মেকি। দুর্ভাগ্যক্রমে যে দু’জন পুলিশ অফিসারকে অকুস্থলে পাঠানো হয়, তাদের ঐ মেকি পিস্তলের কথাটাই জানানো হয়নি। তার ওপর আবার এ ধরনের খেলনার বন্দুক-পিস্তলের নলের উপর যে কমলা রঙের নিরাপত্তা চিহ্নটি লাগানো থাকে, তামিরের খেলার পিস্তলটিতে তা-ও ছিল না।
যে দু’জন পুলিশ অফিসার একটি সিটি রিক্রিয়েশন সেন্টারের বাইরে ছোটদের খেলার জায়গাটিতে গিয়ে পৌঁছান, তারা দেখেন যে, পিস্তলটি একটি টেবিল কিংবা বেঞ্চের উপর রাখা রয়েছে। পুলিশকে দেখে তামির সেটিকে নিজের বেল্টে ঢোকায়, কিন্তু পরে পুলিশ তাকে হাত তুলতে বললে, তামির বেল্ট থেকে সেই খেলনার পিস্তল বার করে যদিও তামির সেই পিস্তল পুলিশের দিকে তাক করেনি, এমকি কিছু বলেনি পর্যন্ত। তখন একজন অফিসার তার দিকে গুলি চালান। এটা ছিল শনিবারের ঘটনা। রবিবার সকালে তামির হাসপাতালে মারা যায়।
স্থানীয় পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ভিডিও ও অপরাপর সাক্ষ্য-সাবুদ সংগ্রহ করেছে এবং সরকারি কৌঁসুলির কাছে পেশ করবে, বলে জানিয়েছে। অতঃপর সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর সেই সব সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্র্যান্ড জুরির কাছে দাখিল করতে পারে। তা থেকে নির্ধারণ করা হবে, পুলিশ অফিসারটি সঙ্গত কারণে, না অসঙ্গতভাবে বলপ্রয়োগ করেছিলেন। তামির রাইস-এর পরিবারবর্গের অ্যাটর্নি কিন্তু জানিয়েছেন যে, তারা ব্যক্তিগতভাবে ঘটনার তদন্ত করে দেখবেন।
অপরদিকে স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ, সিনসিন্যাটি-র অ্যালিসিয়া রিস রবিবারেই ঘোষণা করেছেন যে, তিনি ওহাইও রাজ্যে যতো বিবি গান, এয়ার রাইফেল এবং এয়ারসফ্ট গান বিক্রি হবে, সেগুলো যা-তে চোথে পড়ার মতো রঙচঙে হয় বা তা-তে ফ্লুওরেসেন্ট স্ট্রিপ লাগানো থাকে, সেজন্য বিল আনবেন। ক্যালিফর্নিয়ায় ইতিমধ্যেই এ রকম একটি বিল পাস করা হয়েছে। কিন্তু সব সত্ত্বেও বিশেষ করে গত আগস্ট মাসে মিসুরি রাজ্যের ফার্গুসন শহরে এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর তামির রাইস-এর মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রে জাতিবৈষম্যগত উত্তেজনা বাড়াবে বৈ কমাবে না।