ক্যারিয়ারের শেষটায় এসে প্রমাণ করলেন তিনিও মানুষ। তিনি হারতেও জানেন। ইনজুরিতে পড়ে ট্র্যাকে কাতরাতেও পারেন। স্প্রিন্টে ‘অতিমানবীয়’ উসাইন উল্টের বিদায় হলো ‘মানবীয়’ ট্র্যাজিক ঘটনা দিয়ে। লন্ডনে সদ্য শেষ হওয়া বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশীপের আগে তিনি বলে দিয়েছিলেন, এবারই তার শেষ। বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক তার রোমাঞ্চকর জয়ে বিদায়ের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু হলো উল্টোটা। বোল্টের বিদায় হলো ট্র্যাজিক। আসরের শুরুতে ব্যাক্তিগত ১০০ মিটার ইভেন্টে স্বর্ণ জিততে ব্যর্থ হন জ্যামাইকান এ গতিমাবন। রৌপ্যও নয় বরং জেতেন ব্রোঞ্জ। আর স্বর্ণ জেতেন ডোপ টেস্টে দুইবার নিষিদ্ধ হওয়া মার্কিন দৌড়বিদ জাস্টিন গ্যাটলিন। ব্যাক্তিগত ওই ইেিভন্টে হারের পর গতকাল শেষবারের মতো ৪ী১০০ রিলেতে জ্যামাইকান দলের সঙ্গে ট্র্যাকে নামেন তিনি। দারুণ কিছু করে শেষটা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখানেও ব্যর্থ হলেন বোল্ট। এমন কি দৌড়ও শেষ করতে পারলেন না বর্সকালের সেরা এ দৌড়বিদ। উসাইন বোল্টের শেষটা হলো চোট দিয়ে। ট্র্যাকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে! বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৪ী১০০ মিটার যোগাযোগ দৌড়ে সোনা জিতেছে স্বাগতিক গ্রেট ব্রিটেন। যুক্তরাষ্ট্র জিতেছে রৌপ্য, আর ব্রোঞ্জ পেয়েছে জাপান। জ্যামাইকার রিলেতে বোল্ট ছিলেন সবার শেষে। ব্যাটন হাতে নিয়ে শুরুটা করেছিলেন ঠিকঠাকই। কিন্তু গিয়ার পরিবর্তন করতে গিয়েই সর্বনাশ হয়ে যায়। হ্যামস্ট্রিং চোটে কুকড়ে ওঠেন। দৌড় শেষ করতে পারেননি। আটকে যান। খোঁড়াতে খোঁড়াতে থেমে গিয়ে এক সময় উল্টে পড়ে যান সর্বকালের সেরা এ দৌড়দিব! দ্রুতই হুইল চেয়ার আনা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য হেঁটেই গেছেন ট্র্যাকের বাইরে। দর্শকে ভরা স্টেডিয়াম ক্ষণিকের জন্য থমকে দাঁড়ায় বোল্টের চোট দেখে। তবে একটু পর উল্লাসে ফেটেপড়ে স্টেডিয়াম। কারণ, বোল্টদের হারিয়ে এখানে স্বর্ণ জিতেছে স্বাগতিক দর্শকদের দল। বোল্টের এই করুণ বিদায়ের সঙ্গে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নীপের এই ইভেন্টের ফাইনালে হারল জ্যামাইকা। এরই সঙ্গে সর্বকালের সেরা স্প্রিন্টার বোল্ট ক্যারিয়ার শেষ করলেন মোট ১১টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ ও ৮ টি অলিম্পিক সোনা নিয়ে। বিদায় বলেছেন প্রিয় ট্র্যাককে। বোল্ট এভাবে নিশ্চয়ই বিদায় চাননি! ক্যারিয়ারের শুরু থেকে যেভাবে তিনি স্প্রিন্টের সব রেকর্ড নিজের করে নিযেছে তাতে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন অতিমানব! সেই অতিমানব এদিন যেন নেমে এলেন সাধারণদের কাতারে! শেষটা হলো না ঠিক ‘মানবীয়’ সাধারন।