.
হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় নিজ বাড়ীতেই ঢুকতে পারছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত দুই বৃটিশ রমনী। নাড়ীর ঢানে বাংলা মায়ের দর্শনে সুদুর যুক্তরাজ্য থেকে জন্মভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত মা-বাবার কবর জিয়ারত করতে এসে পড়েছেন চরম বিপাকে। আপন ভাই ও ভাবির ষড়যন্ত্রে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন হাসনা আলী ও রাজনা চৌধূরী।
নিজ বাসার কেয়ারটেকারের বাঁধায় নিজের বাড়ীতেই ঢুকতে না পেরে চোখে অন্ধকার দেখেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত দুই বৃটিশ রমনী। পরে অসহায় অবস্থায় রাত কাটিয়েছেন বোনের বাড়ীতে।
১০/০৮/২০১৭ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভাই শেখ আবু তাহির ও ভাবী শেখ রাহেলা’র বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাদের বোন মাহমুদা খাতুনের ছেলে আলমগীর জামান বুলবুল।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ্, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বাদে দেউলী গ্রামের মৃত তফজ্জুল আলী ও মৃত হনুফা খাতুনের ১ ছেলে ও ৮ মেয়ে। পিতা তফজ্জুল আলী বসবাস করতেন যুক্তরাজ্যে। প্রথমে একমাত্র ছেলে শেখ আবু তাহিরকে এবং পরবর্তীতে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ৪ মেয়েকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যান।
যুক্তরাজ্যে ছেলের নামে একটি বাড়ী কিনেন তফজ্জুল আলী। এছাড়া অন্যান্য মেয়েদের দেশের বিভিন্ন স্থানে বিবাহ দেন। তফজ্জুল আলী একমাত্র ছেলে শেখ আবু তাহিরকে শখ করে বিয়ে দেন উপজেলা সদরের রাজনপুর গ্রামের মরহুম মহিউদ্দিন খান উরফে জড়ি খাঁনের মেয়ে রাহেলা খানমের সাথে।
বোনদের দাবি, শেখ আবু তাহির বিয়ের পর থেকে স্ত্রী শেখ রাহেলার ষড়যন্ত্রে বাবা-মা’সহ পরিবারের সবাইকে যুক্তরাজ্যে বাবার কিনে দেওয়া বাড়ী থেকে বের করে দেন এমনকি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন সুদার্ঘ ৩৪ বছর ধরে।
তৎকালীন সময়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাজ্যে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় তফজ্জুল আলীকে। যুক্তরাজ্যে থাকা মেয়েরা বড় হয়ে তফজ্জুল আলী ও হনুফা খাতুনকে মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত বরণ-পোষণ এবং বাবা-মায়ের সুখ-শান্তির জন্য দেশের বাড়ীতে পাকা ঘর নির্মান করে দেন তারা।
আরো উল্লেখ আছে যে, তফজ্জুল আলী যখন মৃত্যু শয্যায় তখন ৩৪ বছর পর সম্পত্তির লোভে দেশে ফেরেন শেখ আবু তাহির। ভাইয়ের এমন অবহেলায় বৃদ্ধ মাকে পুণরায় যুক্তরাজ্যে নিয়ে যায় মেয়েরা ।
একমাত্র ছেলের এমন আচরণে এবং মেয়েদের ঠকানোর ভয়ে জীবদ্দশায় তফজ্জুল আলী দেশের বাড়ীতে মেয়েদের টাকায় বানানো ঘরসহ ৫৬ শতক জমি বিগত ২০০০ সালের ৮ নভেম্বর ৬ মেয়ের নামে সাব কবালা রেজিস্ট্রি করে দেন যা ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ৫ জুন নামজারিভূক্ত হয়।
তারা হলেন হামিদা বেগম, পরিজা বেগম, হাছনা বেগম, মরিয়ম বেগম, ছলেমা বেগম ও রাজনা বেগম।
পরবর্তীতে মায়ের মৃত্যুতে ছেলে শেখ আবু তাহির নিজের দাবী আছে বলে মায়ের দাফনে বাঁধা প্রধান করারও অভিযোগ করেছেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেছেন, গত ১০ জুলাই ২ বোন হাসনা আলী ও রাজনা চৌধূরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন মা-বাবার কবর জিয়ারত ও শিরনি করার উদ্দেশ্যে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাদেদেউলী গ্রামের নিজেদের বাড়ীতে এসে ভাই-ভাবীর কথিত কেয়ার টেকার মছব্বিরের বাঁধার মূখে পড়তে হয় তাদের। নিরুপায় হয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে থাকা বোন মাহমুদা খনমের বাড়িতে আশ্রয় নেন তারা। ২ দিন পর গ্রামের পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পৈত্রিক ঘরে উঠতে সক্ষম হন তারা।
একপর্যায়ে নিজেদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর বাড়ীতে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করলে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বাংলাদেশী বংশদ্ভোত হাসনা আলী ও রাজনা চৌধূরীর নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ রাখায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এছাড়া তাদের ভাবী শেখ রাহেলা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন টিভি মিডিয়ায় সাংসদ মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাড়ী দখল সংক্রান্ত যে মিথ্যাচার করেছেন এর তীব্র নিন্দাও জ্ঞাপন করেছেন প্রবাসী হাসনা আলী ও রাজনা চৌধূরী।
ভাই শেখ আবু তাহির ও ভাবী শেখ রাহেলা’র ষড়যন্ত্রের কবল থেকে পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির অধিকার আদায়ের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত বৃটিশ নাগরিক হাসনা আলী ও রাজনা চৌধূরী।
.
বার্তা প্রেরক
হাফিজুল ইসলাম লস্কর