ঢালিউডের সাড়াজাগানো নায়ক সালমান শাহকে নিয়ে আমেরিকা প্রবাসী রাবেয়া সুলতানা রুবির পোস্ট করা ভিডিওটি নিয়ে আলোচনায় থামছেই না। সালমান শাহ’র বিউটিশিয়ান হিসেবে কাজ করা এই রুবিই নায়কের হত্যা মামলার সাত নম্বর আসামী।
সালমান শাহ’র মৃত্যুর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়েছে। তারপরও তার রহস্যজনক মৃত্যুর কুলকিনারা হয়নি। এবার রুবি স্বপ্রণোদিত হয়েই বলেছেন, সালমান মরেনি। মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি এ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে রাজি আছেন। তাকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য সাহায্যও চেয়েছেন।
রাবেয়া সুলতানা রুবি থাকতেন সালমানের ফ্ল্যাটের অর্থাৎ ইস্কাটন প্লাজার উত্তর পাশের বিল্ডিংয়ে। তিনি রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রশিদের মেয়ে। প্রয়াত স্বামী ক্যাপ্টেন জামিল ছিলেন তার বর। জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে যে ১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয় তার স্বামী ছিলেন তাদের একজন।
রুবি বর্তমানে এক চাইনিজের সঙ্গে সংসার করছেন। ক্যাপ্টেন জামিলের সংসারে জন্ম নেয়া পুত্র ভিকিকে নিয়ে ৩১ বছর আগে তিনি এই চাইনিজকে বিয়ে করেন। সালমানের মৃত্যুর পর বেশ কয়েক বছর পর তিনি আমেরিকায় পাড়ি দেন। সেখানেই স্বামী-সন্তান নিয়ে বাস করছেন তিনি। ভিডিওতে রুবি বলেছেন, তার স্বামী তাকে মেরে ফেলতে চাইছে। তিনি পালিয়ে আছেন।
সুপন রায়ের ‘সাংবাদিক ও সালমান শাহ’র অজানা কথা’ বইতে উল্লেখ আছে- সুষ্পষ্ট অভিযোগ আছে, সালমান-সামিরার দাস্পত্য কলহের পশ্চাতে রাবেয়া সুলতানা রুবির ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। সালমানকে তিনি দেখে নেবেন, এরকম কথাও বলেছেন অনেকের কাছে। যাদুশিল্পী আজরা জ্যাবিনের কাছে এই রুবি বলেছিলেন, ‘সালমানের সব টাকা তার মা নিয়ে যাচ্ছে সামিরার কি হবে? এবং এ অভিযোগটি করেছেন সালমানের মা নীলা চৌধুরী। তার ভাষ্য, আমার ছেলের টাকা আমি নিলাম না তার বাবা নিল- এসব নিয়ে রুবির মাথা ব্যথা কেন? রুবি কে, যে আমার সংসার জীবনে হস্তক্ষেপ করবে?’
রাবেয়া সুলতানা রুবি গর্ত থেকে সালমান শাহ ও তার পরিবারকে নিয়ে নানা ধরনের মিথ্যা কথা বলে বিভিন্ন সময় নানা ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি ফেসবুকে সালমান শাহ’র মৃত্যু নিয়ে নানা মিথ্যা কথাও প্রচার করছেন। সালমানের মা নীলা চৌধুরীকে কটাক্ষ করে অনেক কথা বলেছেন। সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন এমন বক্তব্য পূর্বেও বলেছেন। কিন্তু আজকের প্রাপ্ত ভিডিওতে তার সুর পালটে গেল।
তিনি বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। আমার হাজব্যান্ড করাইছে এটা আমার ভাইরে দিয়ে, এটা সামিরার (সালমানের স্ত্রী) ফ্যামিলি করাইছে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ। আমি রুবি এখানে ভাইগা আছি। ’
সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা করলে তাতে আপত্তি জানায় পরিবার। এরপর সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ১১ জনকে সালমান শাহের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে হত্যা মামলা দায়ের করে সালমানের পরিবার। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, সহকারী নৃত্যপরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহকর্মী মনোয়ারা