ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার নেইমারের পিএসজিতে যাওয়া নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। এবার সেখানে নতুন ইস্যু তৈরি করল তার স্বদেশী ক্লাব সান্তোস।
তারা নেইমারের ট্রান্সফার অর্থের ভাগ চায়। নেইমারকে পিএসজিতে পাঠিয়ে ২২২ মিলিয়ন ইউরো পেয়েছে বার্সেলোনা। বিশাল এ অর্থ কীভাবে ব্যয় করবে, কাতালান ক্লাবটি এখন সে পরিকল্পনা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে এরই মধ্যে অর্থের ভাগীদার জুটে গেছে! নেইমারের শৈশবের ক্লাব স্যান্টোস ২২২ মিলিয়ন ইউরোর ভাগ চায়।
নেইমারকে কিনতে পিএসজি যে অর্থ দিয়েছে বার্সেলোনাকে, সেখান থেকে ৫ শতাংশ চায় স্যান্টোস, যা দাঁড়ায় ৮৯ লাখ ইউরোর মতো। তবে এখানেই শেষ নয়। বার্সার সঙ্গে পুরনো হিসাবও মিটিয়ে নিতে চায় স্যান্টোস। ২০১৩ সালে নেইমারকে কেনার সময় চুক্তির ধারায় বলা হয়েছে, স্যান্টোসের সঙ্গে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বার্সেলোনা।
২০১৩ সালের গ্যাম্বার ট্রফিতে একটি ম্যাচ খেলেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট, আরেকটি আলোর মুখ দেখেনি। এখন সেই ম্যাচটি না হওয়ায় বার্সার কাছে ৪৫ লাখ ইউরো দাবি করছে ব্রাজিলের ঐতিহ্যবহুল ক্লাবটি। ব্রাজিলের গ্লোবোস্পোর্তে পত্রিকার মতে, দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে চেয়ে বার্সেলোনার কাছে চিঠি লিখে তার জবাব পায়নি স্যান্টোস।
বার্সেলোনার কাছে স্যান্টোস মোট ১ কোটি ৩৪ লাখ ইউরো দাবি করলেও কাতালানরা কানাকড়িও দেবে বলে মনে হচ্ছে না। কেননা এ নিয়ে তারা বেশ চাতুর্যপূর্ণ জবাবই দিয়েছে। বার্সার দাবি, পিএসজির দেয়া অর্থে নেইমার বাইআউট ক্লজের অর্থ পরিশোধ করায় এখানে স্যান্টোসের ৫ শতাংশ ভাগের বিষয়টি কার্যকর হবে না। তাদের কথায়, ‘নেইমার ফ্রি এজেন্ট হয়ে যাওয়ার পর অন্য একটি ক্লাব এসে তাকে দলে সই করায়। ’
পিএসজির কৌশলের কাছেই কি তবে মার খেয়ে যাচ্ছে স্যান্টোস? ২২২ মিলিয়ন ইউরো নিজেদের তহবিল থেকে দিলে উয়েফার ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার নিয়মের গ্যাঁড়াকলে আটকে যেত পিএসজি। তাই পিএসজির সাহায্যে এগিয়ে আসে ওরিক্স কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট। তারাই ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি তুলে দেয় নেইমারের হাতে, খেলোয়াড়টি যা দিয়ে বাইআউট ক্লজের অর্থ পরিশোধ করে নিজেকে মুক্ত করেন। পরে পিএসজি তাকে নিজেদের তাঁবুতে ভেড়ায়। পিএসজি এটা করেছিল নিজেদের প্রয়োজনেই, এখন যা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বার্সেলোনার জন্য। বিশেষ করে, স্যান্টোসকে ৮৯ লাখ ইউরো না দেয়ার সুযোগটা পেয়ে গেছে কাতালানরা।
চুক্তিতে থাকা দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচটি না খেলার জন্য ব্রাজিলীয়রা যে ৪৫ লাখ ইউরো দাবি করছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার আইনি পথও খুঁজছে বার্সেলোনা। ২০১৩ সালে ৮ কোটি ৬২ লাখ ইউরোয় নেইমারকে কিনেছিল বার্সেলোনা। ওই দলবদল নিয়ে অনেক বিতর্ক, অনেক নাটকীয়তা হয়েছে। কর ফাঁকি দিতে প্রথমে অংকটি ৫ কোটি ৭১ লাখ ইউরো বলে দাবি করে বার্সেলোনা। এ অপরাধে কাঠগড়ায়ও দাঁড়াতে হয় ক্লাবটির কর্মকর্তাদের।